ঢাকা: ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেছেন, ২০০৯-১০ সালে ডিজিটাল ওয়াসা গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করি। ১০ বছর পর আমরা নির্দিধায় বলতে পারি, যে অবস্থায় আমরা ছিলাম তার চাইতে অনেক দূর এগিয়েছি।
আমাদের উৎপাদন প্রতিদিন ২৬০ থেকে ২৬৫ কোটি লিটার। যা চাহিদার তুলনায় বেশি। দুই কোটি মানুষকে পানির সুবিধা দেওয়া পাহাড় সমান কাজ।
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে কারওয়ানবাজার ওয়াসা ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে গত ১০ বছরে ঢাকা ওয়াসার অর্জনসমূহ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তাকসিম এ খান বলেন, সিস্টেম লস ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমরা নেটওয়ার্ক ডিস্ট্রিবিউশন এডিয়া বা ডিএমএ গড়ে তুলছি। ঢাকা শহরে মোট ১৪৫টি ডিএমএ হবে। যার মধ্যে ৬৪টি ডিএমএ এরইমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো ঢাকা ডিএমএ’র আওতায় আসবে। এ ধরনের নেটওয়ার্ক দক্ষিণ এশিয়াতে নেই।
ওয়াসা এমডি বলেন, বর্তমানে ঢাকা শহরে আমাদের অনেক দক্ষ, যোগ্য প্রকৌশলী ও ব্যবস্থাপনা টিম আছে। যারা বড় মেগা প্রজেক্টগুলোকে হ্যান্ডেল করতে পারে। এ সক্ষমতা থাকার জন্যই আমরা বড় বড় সংস্থা থেকে ঋণ পাচ্ছি। ঢাকা ওয়াসার ২০০৮ থেকে ২০১০ সালে ফান্ডের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ডেভলেপমেন্ট পার্টনার উন্নয়ন সহযোগিরা আমাদের ফান্ড দেয়নি। কারণ আমাদের সক্ষমতার অভাব। একটা সময় ছিল মাত্র ৪০ মিলিয়ন ডলার আমাদের সহযোগিতা ছিল। বর্তমানে সেটা দুই বিলিয়ন ডলার। আমরা শুধু ঋণ নিচ্ছি সেটা না, আমাদের দেওয়ার যে সক্ষমতা, সে সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। আমাদের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ছিল দশমিক ৯৫ শতাংশ। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দশমিক ৬৫ শতাংশ। আমরা বর্তমানে দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং দশমিক ৬৬ শতাংশও কখনো কখনো অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, আমার মতে শহর বলতে নয়াদিল্লি, মুম্বাই, করাচি যারা মেগা সিটি। তাদের একটি অংশ বস্তিতে বসবাস করে। এ বস্তি এলাকায় পানি ব্যবস্থাপনা খুব একটা বৈধ না। ২০১২ সালে সিদ্ধান্ত নেই, ঢাকা শহরে যে বস্তিগুলো আছে সেগুলোকে আমরা বৈধ পানির আওতায় আনবো। আমরা প্রায় ৭০ শতাংশ বস্তি এলাকাকে বৈধ পানির আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। সেটাকে শতভাগ করতে চাই। ঢাকা শহরের সব বস্তিকে পানির আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছি। এতে আমরা সফল হবো।
ডিজিটালাইজের কথা উল্লেখ করে ওয়াসা এমডি বলেন, আমরা ডিজিটাল ওয়াসা, স্মার্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট করেছি এবং করবো। আমরা সে পথে যাচ্ছি। আমাদের পাম্পগুলো একটা কন্ট্রোলরুম থেকে ব্যবস্থাপনা করি। মানুষের বাসায় যে মিটার সেটা বাসায় গিয়ে দেখে আসতে হয়। আমরা সেটাকে ডিজিটাল করার চেষ্টা করছি। যাতে মিটার রিডিংটা ওয়েবের মাধ্যমে পাই। তাহলে এটাই হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম ডিজিটাল মিটার রিডিং পদ্ধতি। ওয়েবের মাধ্যমে মিটার রিডিং আমাদের আশপাশের কোনো শহরে নেই। এটা যদি আমরা করতে পারি তাহলে এটা হবে আমাদের বড় একটি অর্জন।