পটুয়াখালীর বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা এক নারীর খাদ্যনালী কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার ওই নারীর স্বামী সোহেল হাওলাদার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নওমালা ইউনিয়নের নিজ বটকাজল গ্রামের কৃষক সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী জাহানারা বেগম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। ২২ সেপ্টেম্বর তিনি বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন।
এ সময় হাসপাতালের নার্স শিরীন আক্তার তাকে ডায়লেশন অ্যান্ড কিউরাটেজ (ডি অ্যান্ড সি) করার পরামর্শ দেন। পরে তিনি নিজেই ওই নারীর ডি অ্যান্ড সি করেন। ডি অ্যান্ড সি করার সময় নার্স জাহানারা বেগমের পেটের ভিতরের অংশে খাদ্যনালীর একাধিক অংশ ছিদ্র করে দেন। এ সময় সেখানে কোন গাইনি বিশেষজ্ঞ ছিলেন না।
খাদ্যনালী ছিদ্র করে দেওয়ার পর জাহানারা বেগমের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং মলমূত্র পেটের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এরপর স্বজনরা জাহানারা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের মোকলেছুর রহমান হাসপাতালে নিয়ে যান।
জাহানারা বর্তমানে ওই হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. শাহ আলম তালুকদারের তত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন।
ডা. শাহ আলম তালুকদার বলেন, ‘ডি অ্যান্ড সি করার সময় জাহানারা বেগমের খাদ্যনালীর নীচের একাধিক অংশ ছিদ্র হয়ে গেছে। তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য তার পেটের বাইরে একটি ব্যাগ স্থাপন করা হয়েছে। আগামী ৩ মাস পর তাকে ফের অপারেশন করা হবে।’
ওই নারীর স্বামী সোহেল হাওলাদার জানান, চিকিৎসার জন্য জাহানারা বেগমের অনেক টাকা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে ঋণ করে ৪০ হাজার টাকা চিকিৎসার জন্য খরচ করেছেন। এখন আর তার সামর্থ্য নেই।
সোহেল হাওলাদার মঙ্গলবার নার্স শিরিন আক্তারের বিচার দাবী করে বাউফল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নার্স শিরীন আক্তার বলেন, ‘আমার ভুল হতেই পারে। এ ব্যাপারে জাহানারা বেগমের স্বজনদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এরপরও আমার বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ দিল বুঝতে পারছি না।’
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আমি এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’