ঢাকা: করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে না আসা বা সহজলভ্য না হওয়া পর্যন্ত শীতকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া এবং এইচএসসি পরীক্ষাসহ কোনো পরীক্ষাই নেওয়া ঠিক হবে না বলে মনে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সংগঠন অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিকুর রহমান টুলু এক বিবৃতিতে একথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে না আসবে বা বাজারে সহজলভ্য না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সন্তানদের মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে দেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সমীচীন হবে না এবং এইচএসসি পরীক্ষাসহ কোনো পরীক্ষাই নেয়া ঠিক হবে না। ’
তারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকদের জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে গত ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই ১৭ মার্চের আগের অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা বা পরীক্ষা নেওয়া উচিত হবে না।
‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হলে যদি শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন বা আক্রান্ত হয়ে মারা যান, তার দায়ভার কে নেবে? আমাদের সন্তানরা বেঁচে থাকলে পরে লেখাপড়া ও পরীক্ষা দিতে পারবে। ’
‘বর্তমানে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে না দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বয়স্করাও মসজিদের জামাতে নামাজ আদায়ে শারীরিক দূরত্ব মেনে চলছে না। স্কুল-মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা কীভাবে সামাজিক ও শারিরীক দূরত্ব মেনে চলবে? স্কুল-কলেজ চলাকালীন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ’
নেতারা বলেন, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সরকার অটোপাসের ব্যবস্থা করে এবং ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা ৩ থেকে ৪ মাস গ্যাপ দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ’
তারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা করেছেন অক্টোবর-নভেম্বর মাসে শীতকালে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আসছে। এ বিষয়ে তিনি সর্বস্তরে আগাম প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। অভিভাবকরা স্কুল-কলেজ খোলা ও এইচএসসিসহ সব পরীক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাই কোনোভাবেই শীতের সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণতার সঙ্গে সবদিক বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ও পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে সময়পোযোগী নির্দেশনা দেবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা।