সমাচার ডেস্ক: শেষ মুহূর্তে মিত্র দলগুলোর বাইরেও তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির একটি বড় অংশের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে বিএনপি। সেক্ষেত্রে নির্বাচনি সমঝোতা সফল হলে কয়েকটি আসন তাদের ছাড় দেওয়া হতে পারে।
এর মধ্যে আবার ওই দল থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়েও কেউ ধানের শীষ পেতে পারেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
এনসিপির বড় অংশটির সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি অনেকটা গোপন রাখতে চাইছে বিএনপি। এ নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কেন্দ্রীয় নেতা যুগান্তরকে বলেন, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বেশ এগিয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে সব কিছু স্পষ্ট হতে পারে।
জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে এনসিপির আসন সমঝোতার বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও দুই পক্ষের শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া হয়নি। আর জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির আলোচনা চললেও একটি অংশের এতে সমর্থন নেই। নতুন গঠিত জোটের মধ্যেও রয়েছে আপত্তি।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে একাধিকবার আলোচনা হয়। তবে চাওয়া–পাওয়া নিয়ে শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া হয়নি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা যায় কি না, সে চেষ্টাও ছিল। তবে সেটা আর হয়ে ওঠেনি।
তবে এনসিপির একটি বড় অংশের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে বিএনপি। সেক্ষেত্রে নির্বাচনি সমঝোতা সফল হলে কয়েকটি আসন তাদের ছাড় দেওয়া হতে পারে। এর মধ্যে আবার ওই দল থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়েও কেউ ধানের শীষ পেতে পারেন।
এদিকে জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির সমঝোতার বিষয়টি অনেকটাই চূড়ান্ত হওয়ার পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দল থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তাসনিম জারা। তিনি দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ও রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য ছিলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দলটি থেকে পদত্যাগ করেন এনসিপিতে জামায়াতবিরোধী অংশের নেতা হিসেবে পরিচিত মীর আরশাদুল হক।
গতকাল সন্ধ্যায় দলের ৩০ জন নেতা এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে ‘সম্ভাব্য জোট বিষয়ে নীতিগত আপত্তি’ বিষয়ে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।
তাতে তারা বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো ধরনের জোট এনসিপির নৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করবে এবং রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ ধরনের জোট এনসিপির বহু কর্মী, সমর্থক এবং বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মসহ নতুন ধারার রাজনীতিকে সমর্থন করা বহু সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও হতাশা তৈরি করবে। এর মাধ্যমে এনসিপির নিজস্ব মধ্যপন্থী রাজনৈতিক এজেন্সি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নাহিদ ইসলামকে অনুরোধ জানিয়ে ওই ৩০ নেতা বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক জোটে না যাওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করা হোক। আমরা মনে করি, নীতিগত অবস্থানের ভিত্তিতে কৌশল নির্ধারিত হওয়া উচিত। কৌশলগত কারণে নীতিগত অবস্থান বিসর্জন দেওয়া উচিত নয়।’
এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী নেতাদের মধ্যে আছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল ফয়সাল, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, সদস্য তাওহীদ তানজীম ও সৈয়দা নীলিমা দোলা।
..