আ. লীগের নাশকতার বিরুদ্ধে শিবিরের বিক্ষোভ

আ. লীগের নাশকতার বিরুদ্ধে শিবিরের বিক্ষোভ
নিউজ ডেস্ক: রাজধানীতে জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান এবং নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নাশকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা কলেজ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন সূর্যোদয়ের স্বপ্ন দেখছে। দেশ আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের পথে নতুন প্রজন্ম এক জাগরণ সৃষ্টি করেছে। শহীদ পরিবারের কান্না, আহত ও পঙ্গুদের রক্ত এখনো কথা বলছে; অথচ জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে টালবাহানা চলছে। দেড় বছর পার হলেও অসংখ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এখনো একটি রায়ও দিতে পারেনি সরকার।

তিনি বলেন, যারা জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করতে পারবেন না, তারা দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য নন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে আওয়ামী পুনর্বাসনের ঘোষণা দিয়েছেন-যা জনগণ কখনো মেনে নেবে না। যদি এভাবে চলতে থাকে, যে প্রজন্ম হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়েছে, তারা আপনাদেরও ‘ডাবল লাল কার্ড’ দেখাবে।

জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের পর্যায়ে পড়ে না; তারা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। তাদের কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তারা ইতোমধ্যে সারাদেশে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে, ময়মনসিংহে গাড়িচালককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আগামীতে এ দেশে কোনো আগুন সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদের রাজনীতি চলবে না।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই গণহত্যা, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যাসহ সব গণহত্যার বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই সনদ এ জাতির অন্যতম আকাঙ্ক্ষা, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রে কাঠামোগত সংস্কার হবে। কিন্তু একটি দল সচেতনভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। অবিলম্বে রাষ্ট্রযন্ত্রের সব সেক্টরকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করে গণভোট আয়োজন করতে হবে-যার মাধ্যমে শহীদ, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। এরপর অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে বহু সংস্কারের আলোচনা হলেও শিক্ষা সংস্কার নিয়ে কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। ছাত্রশিবিরের প্রস্তাবিত ৩০ দফা বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশে বিশ্বমানের একটি মডেল শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চাকসুতে ছাত্রশিবিরের বিজয় অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। মাদকবিরোধী আন্দোলনেও আমরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছি এবং আগামী দিনে মাদকমুক্ত, মেধাবী জাতি গঠনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ছাত্রসমাজকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এবং সারাদেশে ছাত্রশিবির ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।

এছাড়া কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ শাহেদী, প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ও ডাকসু জিএস এস. এম. ফরহাদ, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ব সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি হেলাল উদ্দিন, মহানগর পশ্চিম সভাপতি হাফেজ আবু তাহের এবং মেডিকেল জোন সভাপতি ডা. যায়েদ আহমেদ বক্তব্য দেন।

..

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::