আনাছুল হক, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় প্রতিদিনই দেখা দিচ্ছে তীব্র যানজট, যা সকাল ও বিকেলের ব্যস্ত সময়ে রীতিমতো চরম আকার ধারণ করছে। ঈদগাঁও স্টেশন ও বাজারমুখী প্রধান মোড়গুলোতে যান চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘসারি যানজট। অথচ এমন সংকটময় সময়ে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনে দেখা যায় না সংশ্লিষ্ট সার্জেন্টকে। নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় কেবল কনস্টেবল রাম প্রসাদকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি ব্যস্ত উপজেলা হিসেবে ঈদগাঁওয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার প্রতি এমন অবহেলা জনদুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলছে। দিনে দিনে এখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বেড়ে চললেও সড়ক ব্যবস্থাপনা বা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সে তুলনায় উন্নত হয়নি।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যানজটের কারণে শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রোগীবাহী যানবাহন পর্যন্ত দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী নাবিলা আক্তার বলেন,
“প্রতিদিনই স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যায়। সড়কে এত ভিড় থাকে যে, কখনো হাঁটাও কষ্টকর হয়ে ওঠে।”
ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সাদিকুর রহমান জানান,
“স্কুল টাইমে সবসময় যানজট লেগেই থাকে। ট্রাফিক সার্জেন্টকে কখনো দেখি না। শুধু একজন কনস্টেবল, রাম প্রসাদ, তাকে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতে দেখি।”
এদিকে ঈদগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী ফজলুল করিম বলেন,
“বাজারে মালামাল আনতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। এতে প্রতিদিনই ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ছি।”
জানা গেছে, ঈদগাঁওতে বর্তমানে কলেজ, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, নিম্নমাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মোট ১৫ থেকে ১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিতে সড়ক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের দাবি জোরালো হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ট্রাফিক বিভাগে পর্যাপ্ত জনবল না থাকাই এই সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ। স্থানীয়রা একাধিকবার এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ঈদগাঁও ট্রাফিক জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্জেন্ট শান্তময়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি পুলিশ বক্সে অনুপস্থিত থাকায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, যানজট নিরসনে অবিলম্বে পর্যাপ্ত ট্রাফিক জনবল নিয়োগ, দায়িত্বে গাফিলতি রোধ এবং কার্যকর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ঈদগাঁওয়ের সচেতন নাগরিকরা।