স্টাফ রিপোর্টার: ক্ষমতার পালাবদলে বদলে গেছে মাদারীপুর-১,২,৩ আসনের রাজনীতির চিত্রও। ৫ আগস্টের পর বিগত ১৬ বছর হামলা- মামলা, জেল-জুলুম নির্যাতনসহ নানা প্রতিহিংসার শিকার নির্যাতিত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পরে রাজনীতিতে নতুন জীবন ফিরে পায়। তাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগ ও মাঠপর্যায়ের তৎপরতা অনেকটাই বেড়ে চলেছে। গত ঈদুল ফিতরের পর থেকেই রাজনৈতিক কর্মসূচি ছাড়াও বিভিন্নভাবে গণসংযোগ করছেন তারা। ভোটারদের বাড়িতে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে বিয়ে, মেজবান, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজত ইসলাম তাদের নির্বাচনি মাঠ গোছাতে তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নিজেদের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার কথা ভোটারদের জানান দিচ্ছেন। বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন তারা। মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে বিএনপিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা হলেন— জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলু, শিবচর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কামাল জামান নুরুদ্দিন মোল্লা, সাবেক সংসদ সদস্য নাভিলা চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. রোকন উদ্দিন মিয়া, ড. শাহাদাৎ হোসেন, কেন্দ্রীয় সংসদ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ শাখাওয়াত হোসেন নান্নু মোল্লা, উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু জাফর চৌধুরী, মাদারীপুর জেলা বিএনপির সদস্য নাদিরা মিঠু চৌধুরী, জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাসার সিদ্দিকী। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির নেতারা আলাদা আলাদা সভা-সমাবেশ করছেন। বিএনপির নানাভাগে বিভক্ত থাকায় দলের সাধারণ সমর্থকদের মধ্যেও রয়েছে হতাশা। তবে বিএনপির নেতাকর্মীরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন কেন্দ্র থেকে একজন যোগ্য প্রার্থী ঘোষণা করলে এই আসনটি বিএনপি পাবে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বিএনপির একাধিক প্রার্থী এবং গ্রুপিংয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে চায়। শিবচর উপজেলার আমির মাওলানা সারোয়ার হোসেন মৃধাকে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি। তিনি শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, গ্রামের হাটবাজারে গণসংযোগ করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে নিজের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন।
এদিকে ইসলামী আন্দোলন মাওলানা আকরাম হোসাইনকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি সভা-সমাবেশের পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে মাদারীপুর-২ আসনের (মাদারীপুর সদর আংশিক ও রাজৈর উপজেলা) বিএনপিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা হলেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি হেলেন জেরিন খান, মাদারীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান, সরকারি নাজিমউদ্দীন কলেজের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভি.পি) এবং মাদারীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ, মাদারীপুর জেলা বিএনপির সদস্য ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী বাবু মিল্টন বৈদ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার শহিদুল ইসলাম খান,
অন্যদিকে বিএনপির একাধিক প্রার্থী এবং গ্রুপিংয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় জামায়াতে ইসলামী মাদারীপুর জেলা সাবেক আমীর ও কেন্দ্রীয় কমিটির ফরিদপুর অঞ্চলের টিম সদস্য ওলানা আব্দুস সোবাহান খান ।
মাদারীপুর-৩ আসনে বিএনপিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খোন্দকার মাশুকুর রহমান, সহগণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, অন্যদিকে বিএনপির গ্রুপিংয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কালকিনি পৌরসভা শাখার আমীর ও ইসলামী ছাত্রশিবির মাদারীপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম মৃধা।
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুব শিগগির ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠনের কাজ শুরু করবে। নির্বাচনে প্রার্থীর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি বলে জানান এনসিপির নেতারা ।