নাঈম হোসেন দূর্জয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলে বসবাসকারী মেরিন সাইন্স বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মুনমুন আক্তার তার ওপর ধারাবাহিক মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, হলের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিবাদের জেরে তিনি প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলীর পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের শিকার হন এবং বারবার হয়রানির মুখে পড়েন।
মুনমুন জানান, তিনি ২০১৯ সাল থেকে প্রীতিলতা হলে নিয়ম মেনে বসবাস করছেন এবং এর আগে কখনো প্রশাসনের সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু একই ব্লকে অবস্থানরত রিমা নামের আরেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত বিবাদের পর থেকেই তার জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।
মুনমুন দাবি করেন যে, রিমা আওয়ামী শাসনামলে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নেত্রী শামীমা সীমা ও সুমাইয়া শিমুর ছত্রছায়ায় অন্য হলে থাকতো এবং পরবর্তীতে ছাত্রলীগের আরেক নেত্রী ফাল্গুনী দাসের অধীনে প্রীতিলতা ফলে উঠেন।
ঘটনা ক্রমে মুনমুন ও রিমার বিবাদের ব্যাপারটি হল প্রভোস্ট পর্যন্ত গেলে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী একপাক্ষিক ভাবে রিমা’র পক্ষ নিয়ে কেবল মুনমুনকেই দোষারোপ করেছেন বলে জানান ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী।
মুনমুন আরও জানান, হল প্রভোস্ট তাকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখে মানসিকভাবে টর্চার করেছেন যার ফলে সে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং অজ্ঞান হয়ে যান। সুস্থ হতে না হতেই মুনমুনকে আবারও নানা রকম ভাবে হল প্রভোস্ট হেনস্থা করেন এবং হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে জানান মুনমুন। পরবর্তীতে পরীক্ষার কথা বলায় অনিচ্ছাসত্বেও পরীক্ষা সময় পর্যন্ত হলে অবস্থানের অনুমতি দেন প্রীতিলতা হল প্রভোস্ট।
মুনমুন জানান, তিনি এ পরিস্থিতিতে অসহায় বোধ করছেন এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিচারপ্রক্রিয়ায় কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট তিনি সুবিচার চান এবং তার সুস্থতা, নিরাপত্তা ও আবাসন নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মুনমুন আক্তার দৈনিক সমাচারের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নাঈম হোসেন দূর্জয় কে বলেন, আমি সেন্সলেস হয়ে গেছি, মেডিকেল থেকে আসছি, যাওয়ার থেকেই আমার ফোন নিয়ে গেছে। আসার পর উনি আবার আমাকে ১ ঘন্টা ইচ্ছে মতো বকাঝকা করেছে। এরপর আমার থেকে লিখিত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার পরীক্ষা সামনে উনার উচিত সবকিছু শুনে ব্লকের সবাইকে ডাকা, কিন্তু উনি সেটা না করে হুটহাট সিদ্ধান্ত নেয় যেটা একজন শিক্ষক হিসেবে উনি করতে পারেন না, উনি আমাদের অবিভাবক উনি সিদ্ধান্ত নিবে সবার কথা শুনে। এবং সর্বশেষ তিনি বলেন, আমার দোষ থাকলে অবশ্যই আমি হল ছেড়ে দিব তবে সেটা যৌক্তিক কারণ এবং প্রমাণ দুটোই দিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দায় অস্বীকার করে প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী দৈনিক সমাচারের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নাঈম হোসেন দূর্জয় কে বলেন, আমরা শুনেছি ও রিমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছিল। যেহেতু ওর কাগজপত্র নাই, আমরা মনে করেছি যে ওকে হলে রাখাটা আমাদের জন্য রিস্কি হবে। মুনমুনের অসুস্থতার বিষয় তিনি বলেন, সি ওয়াজ এক্টিং, ও জোর করে দাঁত চেপে ধরতে ছিল। ওর আই কন্টাক্ট সবকিছু ঠিক ছিল।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের মাঝে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেকে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।