রবিউল হাসান ডব্লিউ,দশমিনা(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:দশমিনা উপজেলায় দুই সন্তানের এক জননীকে মুখবেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা করায় তিন দিন পরে মোঃ সাব্বির(২০) নামে এক যুবককে আটক করেছে স্থানীয়রা।
শুক্রবার ১১ এপ্রিল রাত ১০ টার দিকে উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামে ওই যুবককে আটক করে স্থানীয়রা। এর আগে গত বুধবার রাতে ওই নারীর সাথে এমন ঘটনা ঘটে।
আটক কৃত হলেন উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড খলিশাখালী গ্রামের হারুন গাজীর ছেলে সাব্বির(২০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,গত বুধবার(৯এপ্রিল) রাত ৯ টার দিকে প্রকৃতির ডাকে তাসলিমা ঘরের বাহিরে গেলে ৪ জন যুবক মুখে কাপড় বেঁধে টানাহেঁচড়া করে পাশের বিলে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে ওই নারী নিজেকে বাচাঁতে তাদের সাথে দস্তদস্তি করেন। দস্তাদস্তির এক পর্যায় তার তলপেটে লাথিমেরে মাটিতে শোয়াইয়া ফেলে। তার কাপড়চোপর টানাহেঁচড়া করে ছিড়ে ফেলে। পাশদিয়ে মটরবাইক যাওয়ার সময় আলোদেখে ওই নারীকে রেখে তারা পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
পরে হামাগুরি দিয়ে তানজিলা বাসায় এসে আমাকে বাঁচও বলে চিৎকার করে তখন তার স্বামী সহ এলাকর লোক জন এসে খোঁজ করে কাউকে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনা রাতেই ইউপি সদস্যকে জানান তারা এবং বৃহস্পতিবার সকালে থানায় বিষয়টি তানজিলা ও তার স্বামী অবহিত করেন।
এই ঘটনার পূর্বে তানজিলার ঘরের মধ্যে রাতে কে বা কাহারা ১০-১২ দিন চিরুকুট লিখে রেখে দেয়। তাতে লেখা থাকে তোমাকে আমার পছন্দ আমি তোমাকে ভালোবাসি তোমাকে কোন না কোন সময় আমি নিয়ে যাবো। তাতে থানায় অভিযোগ দিলেও কাজ হবেনা। তুমি আমার হবেই আজ না হয় কাল।এই চিরুকুট থানায় জমা দেবার পরই বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটে।
তানজিলা জানান,আমি আর আমার স্বামী পেটের তাগিতে ব্যবসা করি। স্বামী রাতে আমি দিনে দোকান পরিচালনা করি। ১০-১২ দিন পর্যন্ত কে বা কাহারা আমার ঘরের মধ্যে ছোট ছোট কাগজে লিখে রেখে ঘরের মধ্যে রাতে ফেলে রাখে যাতে লেখা ছিল আমি তোমাকে ভালোবাসি, তোমাকে ছাড়া বাচঁবোনা, যে কোন সময় তোমাকে নিয়ে যাবো। এই কাগজ আমি এবং আমার স্বামী থানায় গিয়ে দেখিয়ে জমা দেই। বুধবার রাতে আমি প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাহিরে বের হলে ৩-৪জন আমার মুখ বেঁধে বিলের দিকে নেওয়ার চেষ্টাকরে আমি তাদের সাথে দস্তদস্তি করি একপর্যায় আমাকে মাটিতে ফেলে পেটের উপর লাথিমারে এবং আমার পড়নের জামা টানাহেঁচড়া করে ছিড়ে ফেলে। টানাহেঁচড়ার সময় একজনকে আমি হাতে নক দিয়ে আচড় দেই। দস্তদস্তি সময় রাস্তার পাশ দিয়ে মটরবাইক যাওয়া আলো দেখতে পেয়ে সকলে পারিয়ে যায়। আমি বাসার সামনে এসে বাঁচও বাঁচাও বলে চিৎকার করি তখোন আমার স্বামী এগিয়ে আসে এবং পরে এলাকার লোকজন এসে খোঁজাখুজি করে কাউকেই পায়নি। ওই রাতেই এই ঘটনা স্থানীয় ইউপি সদস্য কে জানাই এবং সকালে থানায় জানাই। শুক্রবার রাত ১০টায় সাব্বির আমার দোকানে আসলে সোহাগ খলিফা সাব্বিরের হাতে হাত মিলিয়ে দেখে হাতের কনুর নিচে আচরের দাগ। দাগের কথা জিঞ্জসা করলে বলে বাঁশের টনিতে আচর লাগছে। পরে ইউপি সদস্য সহ এলাকার লোকজন জিঞ্জাসা করলে সাব্বির স্বীকার করে ওই রাতে এনামুল, মুছা ও আসিফসহ তারা চার জন ছিলো। পরে খবর দিয়ে দশমিনা থানা পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়।
এই ঘটনায় সাব্বিরের কাছে যানতে চাইলে, ঘটনার বিষয় সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মুছা তাকে ভালোবাসে,মুছা এই পরিকল্পনা করেছে।ওই রাতে আমি, এনামুল, মুছা ও আসিফসহ চার জন ছিলাম। আমরা আগ থেকেই ওতপেতে ছিলাম রাতে ওই মহিলা(তানজিলা) ঘরের বাহিরে এলে মুখবেঁধে বিলের মাঝে নেওয়ার চেষ্টা করি। অনেক দস্তাদস্তি হয় পরে মটরবাইকের শব্দ পেয়ে আমরা পালিয়ে যাই। আমার হাতের আচর দস্তাদস্তির সময়ের।
ইউপি সদস্য বাদল বলেন,তানজিলা বুধবার আমাকে ঘটনার বিষয় বললে আমি থানায় পাঠাই। আমাদের গ্রামের যুবসমাজ খোঁজ করি কার হাতে আচরের দাগ আছে। শুক্রবার রাতে সাব্বির তানজিলার দোকানে আসলে সোহগ খলিফার হাতে ধরা পরে । সাব্বির আমাদের কাছে ওই রাতের কথা স্বীকার করে। আমি থানায় ফোন করি। দশমিনা থানা পুলিশ এসে সাব্বিরকে নিয়ে যায়। আমি এদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করি।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মাদ আবদুল আলিম জানান, ঘটনার বিষয় শুনে থানা থেকে পুলিশ পাঠিয়ে জনতার হাতে আটক সাব্বির নামের একজকে থানায় আনা হয়েছে। পরবর্তি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।