আরডিএ’র অনুমোদন ছাড়াই ফুটপাতে বহুতল ভবন নির্মান

আরডিএ’র অনুমোদন ছাড়াই ফুটপাতে বহুতল ভবন নির্মান
আবুল কালাম আজাদ রাজশাহী : রাজশাহী নগরীর তেরোখাদিয়া এলাকায় ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। গত ৫ আগস্টের পরে এই ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দা সারোয়ার উদ্দিন। স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের ম্যানেজ করে তিনি ভবনটির কাজ শুরু করেন। এখন পর্যন্ত তিন তলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। সর্বমোট পাঁচতলা পর্যন্ত এই ভবনটির নির্মাণ কাজ করা হবে। ভবনটির পাশে আরেকটি একতলা ভবন গড়ে তোলা হয়েছে ফুটপাতে দখল করে। এটি করেছেন স্থানীয় রবিউল ইসলাম নামের এক বিএনপি কর্মী। মাঝে আরও একটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেটিও তিনি করছেন। তবে  কাজ বন্ধ রেখেছেন।
রাস্তার ফুটপাত দখল করে ভবনগুলো যেন নির্মাণ করতে না পারেন, তা নিয়ে এলাকাবাসী রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন ভবন দুটির নির্মাণ কাজ চেষ্টা করেও থামাতে পারেনি। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা আবু নূর মতিউর রহমান ডালিম বলেন, রাস্তা ঘেঁষে ফুটপাত দখল করে তেরখাদিয়া এলাকার ওই জমিটি নিয়ে স্থানীয় সানোয়ার উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সিটি কর্পোরেশনকে তার জায়গা বলে দাবি করে কয়েকবার চিঠি দিয়েছিলেন। তবে গত ৫ আগস্ট এর আগে তিনি ওই জায়গায় ভবন নির্মাণ করতে পারেননি সিটি কর্পোরেশনের বাধার কারণে। কিন্তু ৫ আগস্ট এর পরে হঠাৎ করে সেখানে তিনি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন।’
তিনি আরো বলেন, আমরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটি আর রোধ করা যায়নি। একেবারে রাস্তা ঘেঁষে এবং ফুটপাতের কিছু অংশ দখল করে ওই ভবন দুটি যেন গড়ে তুলতে না পারে, সে নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীও আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। তারপরে ভবন মালিক জোর করে আরডিএর অনুমোদন ছাড়ায় ৫তলা বিশিষ্ট ভবনটি গড়ে তুলছেন। তার দেখাদেখি পাশে আরেকটি ভবনও সিটি কর্পোরেশনের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে একতলা এই ভবনটি কে গড়ে তুলেছে সেটি বলতে পারব না।’
স্থানীযরা জানান,গত ৫ আগস্ট এর পর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ফুটপাত এবং ড্রেনের মাঝখানে পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন সানোয়ার উদ্দিন। বছর দুয়েক আগে সিটি করপোরেশন জায়গাটি অধিগ্রহণ করে সেখানকার পুরনো ভবন উচ্ছেদ করেছিলো। এরপর দুই পাশে ড্রেন এবং ফুটপাত নির্মাণ করা হয়। পাশাপাশি রাস্তা বর্ধিত করণ করা হয়। তার পরে ফুটপাত আর ড্রেনের মাঝখানে অনেকটা অংশ থেকে যায়। মাত্র ১৮ থেকে ২০ হাত প্রস্থের এই জায়গাটিতে এখন পাঁচতলা ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে। অথচ ভবন নির্মাণের জন্য আরডি’র কোন অনুমোদন নেয়া হয়নি। তার দেখাদেখি স্থানীয় রবিউল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি একেবারে ফুটপাতের উপর গড়ে তুলছেন একতলা দুটি ভবন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা এ ভবন দুটি নির্মাণ করছেন বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
আরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ম্যানেজ করে ভবন দুটি গড়ে তোলা হচ্ছে। ফুটপাতের ওপর কিভাবে বহুতল ভবন গড়ে উঠতে পারে, তা আমাদের কাছে বিস্ময়কর মনে হয়।
তবে সানােয়ার উদ্দিন দাবি করেন তিনি ওই জায়গাটির সম্প্রতি কিনে নিয়েছেন। তার নামে খাস না খারিজ সবকিছুই আছে। অধিগ্রহনের সময় জায়গাটি ছাড়া পড়েছিল। ছাড়াপাড়া ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় তিনি ৫ তলা ভবন নির্মাণ করছেন। সিটি করপোরেশনের জাযগায় না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সাবেক মেয়র এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে সেখানে ভবন নির্মাণ করতে দেননি।’
তবে রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি ছোট একটা দোকান করছেন। কিন্তু বড় ভবন যে গড়ে উঠছে, সেটি কেউ দেখতে পাচ্ছে না।
,জানতে চাইলে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথোরাইজড কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই ভবন ভবনগুলো অনুমোদন নাই। কিভাবে রাস্তা এবং ফুটপাতের জাযগা না ছেড়ে এভাবে বহুতল ভবন উঠছে, সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেযা হবে। এগুলো ভেঙে ফেলার জন্য চিঠি দেয়া হবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::