ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের নিহতরা একই পরিবারের স্বজন

ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের নিহতরা একই পরিবারের স্বজন
ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরে রেলগেট পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাকায় মাইক্রোবাসের ৫ জন নিহত ব্যক্তিরা একই পরিবারের স্বজন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ২জন। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১২টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের মুন্সিবাজার রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ও আহতরা একই পরিবারের সদস্য। তারা ফরিদপুরের সদরপুর চন্দ্রপাড়ায় মেয়ে দেখতে যাচ্ছিলেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন, নারায়নগঞ্জ জেলা সদরের ভূঁইয়া বাড়ির লিটন চৌধুরী, তার স্ত্রী ফাহমিদা শারমিন, মেয়ে সাজু, লিটন চৌধুরী শ্যালকের স্ত্রী আতিফা ও তাদের আত্মীয় রিন্টু।
থানা ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গজারিয়া এলাকার দিক থেকে আসা একটি মাইক্রোবাস দ্রুত গতিতে মুন্সিবাজার কাফুরা রেলক্রসিং পার হচ্ছিল। এ সময় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটির ধাক্কায় ঘটনাস্থল থেকে মাইক্রোবাসটি প্রায় ১০০ গজ দুরে রাস্তার ধারে একটি পুকুরে ছিটকে পড়ে। এক পর্যায়ে ধুমড়ে—মুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসটির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যায়। মারাত্মক আহত অবস্থায় ৫জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আরো ২জন মারা যায়। হাসপাতালে দুইজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহত লিটন চৌধুরীর মেয়ে তাসরি (২২) জানান, নারায়ণগঞ্জের ভূঁইয়া বাড়ি থেকে সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়ায় যাচ্ছিলেন বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে। তবে তারা কার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে যাচ্ছিলেন সেটা জানা সম্ভব হয়নি। গাড়ীতে তার বাবা লিটন চৌধুরী, মা ফাহমিদা শারমিন মনু, তাদের মেয়ে সাজু, শ্যালকের স্ত্রী আতিফা, রিন্টু, শালিকা অরিন ও ড্রাইভার নাজমুল হাসানসহ ৮ জন ছিলেন। এর মধ্যে বাবা লিটন চৌধুরী, মা ফাহমিদা শারমিন মনু, বোন সাজু, তার মামী আতিফা ও আত্মীয় রিন্টু মারা গেছে। এ ব্যাপারে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, দূর্ঘটনায় মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যায়। আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পরে আরো দুইজন মারা গেছে বলে জানতে পেরেছি। নিহত ও আহতদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মাইক্রোবাসটিতে ৭জন যাত্রী ছিল।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্যা জানান, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছে। দুইজন আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ওই ক্রসিংয়ে কোন গেটম্যান না থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটলো। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি নিহতরা নারায়নগঞ্জের বাসিন্দা। তারা একই পরিবারের আত্মীয়—স্বজন। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::