আনাছুল হক,কক্সবাজার প্রতিনিধি:শিক্ষা ও পরিশ্রম যখন একসঙ্গে মিলিত হয়, তখন তা সাফল্যের গল্প গড়ে তোলে। কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও উপজেলার এক প্রত্যন্ত এলাকার এমনই এক গল্পের নায়ক আরিফুল ইসলাম। কক্সবাজার সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষে ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করা এই ছাত্র, ৬ কানি জমিতে বরই ও পেয়ারা চাষ করে নিজেকে একজন সফল কৃষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
আরিফুল ইসলাম তাঁর নিজ এলাকার কালিরছড়া শিয়া পাড়া গ্রামে ৩ বছর আগে দেশি-বিদেশি নানান ফল ও শাকসবজি চাষ শুরু করেন। একদিকে পড়াশোনা, অন্যদিকে চাষাবাদ—দুটো দিক সামলানোর অদম্য ইচ্ছা থেকেই তিনি কৃষির দিকে ঝোঁকেন। এ বছর তিনি ৫০০ দেশি-বিদেশি বরই গাছের চারা লাগিয়েছেন, যা ইতোমধ্যে ফল দেওয়া শুরু করেছে। পাশাপাশি তিনি পেয়ারা চাষেও মনোযোগ দিয়েছেন এবং ২,০০০ পেয়ারা গাছ লাগিয়েছেন।
আরিফ তাঁর জমিতে উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ পরিচালনা করেন। তিনি জানান, বরই গাছগুলোতে ফল ধরতে শুরু করেছে, যা তাঁকে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। যদিও চাষাবাদে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু পরিশ্রম এবং ধৈর্যের মাধ্যমে সেগুলো অতিক্রম করেছেন।
আরিফের চাষ করা বরই ইতোমধ্যেই স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তাঁর প্রত্যাশা, এ বছর তিনি বরই বিক্রি থেকে একটি উল্লেখযোগ্য আয় করতে পারবেন। পেয়ারা গাছগুলো থেকেও শিগগিরই ফল আসার আশা করছেন তিনি।
আরিফের কাজ তাঁর এলাকাবাসী এবং তরুণদের জন্য একটি উদাহরণ।
তিনি প্রতিবেদককে বলেন, “পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষিকাজ করলে নিজে স্বাবলম্বী হওয়া যায় এবং অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা তৈরি করা যায়।” ভবিষ্যতে তিনি এই চাষাবাদ আরও সম্প্রসারণ করতে চান এবং আধুনিক কৃষি পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে নিজের উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিতে চান।
উল্লেখ্য, চাষাবাদের মৌসুমে আরিফ তাঁর বাগানে ১০ জনেরও অধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন। এতে স্থানীয় শ্রমিকরা কাজের সুযোগ পেয়ে উপকৃত হন।
আরিফুল ইসলামের মতো তরুণদের উদ্যোগ আমাদের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে। তাঁর সাহসী উদ্যোগ এবং সাফল্যের গল্প অন্য শিক্ষার্থীদেরও অনুপ্রাণিত করবে নতুন সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যেতে।