নিজস্ব প্রতিবেদক:দক্ষিন কেরানীগঞ্জের বাঘৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনকালে আশা রহমান নামে এক শিক্ষিকা লাঞ্চিত হয়েছেন। শিক্ষিকার অভিযোগ, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল আমীন তাকে লাঞ্চিত করেছেন। রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনসুর আহমেদ এর মেয়ের জামাই অভিযুক্ত শিক্ষক আল আমীন। আর মেয়ে তাসলিমা আক্তার স্কুলের অফিস সহকারী। বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের সময় কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পান আবুল মনসুর আহমেদ। এরপর মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে স্কুলে নিয়োগ দিয়েছেন। শ্বশুর, জামাই আর মেয়ে মিলে ইচ্ছেমতো স্কুল পরিচালনা করছেন। তাদের কাছে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক ও ষ্টাফরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
শিক্ষিকা আশা রহমান বলেন, তাদের কথামতো না চললেই হুমকি। পূর্ব শত্রুতার জেরে ষষ্ঠ শ্রেণীর ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালীন রুমে ঢুকে আল-আমীন স্যার আমাকে তুই-তোকারি করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আমি অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সত্ত্বেও আমার গায়ে হাত তোলেন। নিজের আত্মরক্ষার জন্য আমার স্বামীকে ফোন দিয়ে নিয়ে আসলে প্রধান শিক্ষক বহিরাগত লোকজন স্কুলে এনে আমার স্বামীকে আক্রমণের চেষ্টা করেন। স্কুলের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেন। আমি এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
শিক্ষার্থীরা জানান, পরিক্ষার চলাকালীন সময়ে আল-আমীন স্যার আশা ম্যাডামকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়।এতে অন্তঃসত্ত্বা আশা মেডাম শরীর আঘাত পায়। আমরা আল-আমীন স্যারের এই অন্যায়ের বিচার দাবি করছি। আল-আমীন স্যার ও তার স্ত্রী তাসলিমা মেডাম বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ ও গালাগালি করেন।
অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাঘৈর হাইস্কুল পরিবারতন্ত্রের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। প্রধান শিক্ষক আওয়ামিলীগের প্রভাব খাটিয়ে তার মেয়েকে স্কুলের অফিস সহকারী পদে চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। অফিস সহকারী পদে থেকেই সকল শিক্ষকদের তার নির্দেশেই চলতে হয়। এরপর মেয়ে জামাই আল আমীনকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বোন জামাই প্রধান শিক্ষক আবুল মনসুর আহমেদ। তিনি স্কুলে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছেন।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, হাতাহাতির অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সমাধান করে দিয়েছেন। আর অন্যান্য অভিযোগ সত্য নয়।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া বলেন, শিক্ষকদের এ ধরনের দ্বন্দ্ব অপ্রত্যাশিত। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে এর প্রভাব পড়বে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।