নাজমুল হুদা : সৈয়দপুর ( নীলফামারী) প্রতিনিধি : ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করা সহ বর্তমান সময়ে নানা কাজে অভিভাবকদের জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। আর এখন এই জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়ে নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভায় দেখা গিয়েছে নানান জটিলতা সৈয়দপুর পৌরসভার বাসিন্দাদের বড় একটি অংশের জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য ত্রুটিপূর্ণ রয়েছে।২০১২ সালে জন্ম নিবন্ধনের ডাটা এন্ট্রিতে সারা দেশে প্রথম হয়েছিলো নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা। সে সময় তড়িঘড়ি আর খেয়াল খুশি মতো সংগ্রহ করা তথ্য এন্ট্রি করা হয় জাতীয় জন্ম নিবন্ধন সার্ভারে। দায়সারাভাবে জাতীয় সার্ভারে তথ্য এন্ট্রির বিষয়টি তাৎক্ষণিক নজরে না এলেও কয়েক বছর পর থেকে সহস্রাধিক মানুষের ব্যক্তিগত নানান তথ্য ভুলভাবে সার্ভারে আপলোড হওয়ার বিষয়টি নজরে আসে। বেশির ভাগেরই জন্ম নিবন্ধনে বাবা-মায়ের নাম ভুল এসেছে আবার কারো কারো জন্মস্থান,জন্ম সাল ভুল এসেছে এতে নানা প্রয়োজনে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। জন্ম সনদে ভুল তথ্য থাকায় প্রয়োজন হয় সংশোধনের। সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রতিদিন ভিড় করছেন শতশত ভুক্তভোগী। অভিযোগ উঠেছে, সার্ভার জটিলতাসহ নানা কারণ দেখিয়ে তথ্য সংশোধনে চলে যাচ্ছে মাসের পর মাস। একই অবস্থা মৃত্যু সনদ সংগ্রহের ক্ষেত্রেও। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আটকে থাকছে প্রয়োজনীয় সরকারি নথিটির অভাবে। কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, সৈয়দপুর পৌরসভায় সংশোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার জন্ম সনদ। তথ্য সংশোধনে সংশ্লিষ্ট দফতরে দিনের পর দিন ঘুরেও নানা অজুহাতে সমাধান না পাওয়ার অভিযোগ স্থানীয়দের। ভুক্তভোগীরা জানান, কাজকর্ম রেখে সারা দিন দাড়িয়ে থেকেও কোনো সমাধান পাচ্ছেন না তারা। ভুক্তভোগী বানিয়াপাড়া বাসিন্দা সবনাজ আক্তার জানান, আমার হাতে থাকা এনালগ কপি তে তথ্য সঠিক থাকলেও এখন অনলাইনে রয়েছে আমার নামের ভুল ।এ বিষয়ে আমি জানতে পারি, আমার সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য আমার অনলাইন জন্মসনদের প্রয়োজন হলে সেই সময় আমি সৈয়দপুর পৌরসভায় যাই অনলাইন জন্মসনদ করে নিয়ে আসলে দেখতে পাই যে আমার নামের ভুল হয়েছে। এখন দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে সৈয়দপুর পৌরসভা থেকে ডিসি অফিস পর্যন্ত । ঠিক এমন শত শত অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন পৌরসভার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কক্ষে ভিড় করছেন ভুক্তভোগীরা
সৈয়দপুর পৌরসভার পরিদর্শক আকমল সরকার রাজু বলেন, এটা আমরা কোনো পুরস্কার পাওয়ার অভিলাষে করিনি। তৎকালীন সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্দেশে ডাটা এন্ট্রিটা করা হয়েছে। সৈয়দপুর পৌরসভার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. মামুন বলেন, যারা ডাটা এন্ট্রি করেছেন, তারা লেজার ফলো করেননি। দেখা যাচ্ছে লেজারে একটা নাম, ডাটা এন্ট্রিতে আরেকটা নাম। এতেই জটিলতা বেড়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সদ্য যোগদান কৃত পৌরসভার প্রশাসক নূর-ই আলম সিদ্দিকী জন্ম নিবন্ধন সার্ভারে তথ্যের গড়মিলের বিষয়টি স্বীকার করেন বলেন, ভুলত্রুটি সংশোধনের কাজ চলছে। নাগরিকের যে কাঙ্ক্ষিত সেবা সেটা পেতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে আমরা কাজ করছি, দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।