নাজমুল হুদা : সৈয়দপুর ( নীলফামারী ) প্রতিনিধি : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সেজেছে নান্দনিক ছোঁয়ায়। যেখানে ঠাঁই পেয়েছে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জন বর্ণ, জাতীয় বীরশ্রেষ্ঠরা, ছন্দ, শিক্ষণীয় নানা চিত্র ও মজার মজার বিষয়।
এতে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে পাঠশালায় আসছে।
এদিকে পথচারী ও দর্শনার্থীরা দেখে প্রশংসা করছেন স্কুল পরিচালনা কমিটি, শিক্ষকমণ্ডলী ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের।
সূত্র জানায়, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ক্লাস্টার রয়েছে মোট তিনটি।
এগুলো হচ্ছে কামারপুকুর, রামকৃষ্ণ ও পূর্ব বোতলাগাড়ি। শহর ও গ্রামের প্রতিটি স্কুল নতুনরূপে সেজেছে।
স্কুলের ভেতর ও বাহির নানা কথায় ও বর্ণে রঙে রঙে রাঙানো হয়েছে।
বাংলা স্বরবর্ণ, ব্যাঞ্জনবর্ণ, ইংরেজি বড় ও ছোট হাতের অক্ষর, অক্ষর দিয়ে পশু-পাখি, একতারা, ঈগল, হাতি, ওল, ইট, ঐরাবত, ওষুধ, শহীদ মিনার, গ্রামীণ চিত্রসহ আমাদের স্কুল আনন্দের এক রঙিন ফুল, স্বপ্ন দেখতে শেখো কারণ স্বপ্ন না দেখলে তুমি কথনোই সফল হতে পারবে না, আমরা প্রতিদিন স্কুলে যাই, কেন আপনার সন্তানকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করবেন, আছে সাত দিনের নাম, বর্ষাকাল, বিকেল, উপদেশ ও নীতিকথা।
ছবিসহ সাত বীরশ্রেষ্ঠ হলেন- বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান (সিপাহি), বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল (সিপাহি), বীরশ্রেষ্ঠ নুর মুহাম্মদ শেখ (সিপাহি), বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গির (ক্যাপ্টেন), বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ (ন্যান্স নায়েক), বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন (স্কোয়াড্রন) ও বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান (ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট)।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, এসব ছবি ও লেখা আমাদের ভালো লাগে। আমরা আগ্রহ নিয়ে স্কুলে আসি এবং এসব দেখে আমাদের বড় হওয়ার ইচ্ছে করে।
সৈয়দপুরের বানিয়াপাড়া আজিজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির (পিটিএ) সভাপতি এম. ওমর ফারুক জানান, প্রাইমারি স্কুলগুলো নতুন রূপ দেখে সহজে আলাদা করা যায় অন্যান্য উপজেলা থেকে। এখানে স্কুলে ছোটদের নিয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলোতে অংশ নিচ্ছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।
রংপুর বিভাগে শ্রেষ্ঠ হওয়া সাবর্ডিনেট কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিউলি সুলতানা জানান, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাদ বাগান, ফেসবুক পেজ খুলে ও সৃজনশীল কাজে প্রশংসিত হচ্ছে। বিদ্যালয় থেকে ছাত্রের ঝরে পড়াও অনেক কমেছে।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা অফিসার ও কামারপুকুর ক্লাস্টারের তদারকি কর্মকর্তা মরিয়ম নেসা বলেন, এই ছোট ছোট পায়ে চলতে চলতে শিক্ষার্থীরা ঠিক পৌঁছে যাবে গন্তব্যে। দৃশ্যমান পরিবর্তনের ছোঁয়ায় কামারপুকুর ক্লাস্টারের স্বপ্নের বিদ্যালয়গুলো। বিদ্যালয়গুলো আমার আবেগের জায়গা, আর সম্মানিত শিক্ষক শিক্ষার্থী ভালোবাসার। ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা দেওয়াল পত্রিকাও প্রকাশ করছে।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন সরকার বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি, শিক্ষকরা সবার সহযোগিতায় স্কুলে স্কুলে এসব করা সম্ভব হয়েছে। এসব কাজে তিনটি ক্লাস্টারে ক্রেস্ট দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা আমাদের উৎসাহিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর আমাকে রংপুর বিভাগে শ্রেষ্ঠ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ফলে কাজের দায়িত্ব বেড়েছে। পুরো উপজেলায় আমরা টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিটি স্কুলে পঠন দক্ষতা বৃদ্ধিসহ নানা সৃজনশীল কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করি সৈয়দপুর উপজেলা খুব শিগগিরই রোল মডেল হবে।