আবুল কালাম আজাদ,রাজশাহী: বাংলাদেশ রেলের ইতিহাসে দূর্নীতির অভিযোগের খবর এখন গা,সহা। প্রতিনিয়ত রেল কর্মকর্তারা নিজনিজ সাধ্য মত রেলের অর্থ লুটপাটে ব্যাস্ত।২০২০-২১ অর্থবছরের অডিটে পশ্চিম রেলের সিএসটিই (টেলেকম) দপ্তরের কেনাকাটায় বিস্তর ঘাপলার প্রমান পেয়েছে সরকারি অডিট দপ্তর।
সম্প্রতি পশ্চিমাঞ্চল রেলের দপ্তর গুলোতে নিয়োমিত অডিট করার সময়, দপ্তরটির কেনা কাটার ব্যাপক অনিয়োম দেখে চোখ ছানাবড়া হয় অডিট কর্মকর্তাদের।অডিট কর্মকর্তারা বলছেন পশ্চিম রেলের কেনাকাটায় এতবড় সুক্ষ্ণ ঘাপলা এর আগে হয়নি। শুধু কেনাকাটায় নয়,মালামাল না কিনেই লুটপাট করা হয়েছে বিপুল অংকের সরকারি বা রেলের অর্থ।
২০২০-২১ অর্থবছরের অডিট প্রতিবেদনের নথিপত্র দেখে জানা গেছে,পশ্চিমাঞ্চলের সিএসটিই কার্যালয়েও কেনাকাটার নামে সরকারি অর্থ লুটপাট হয়েছে। তোশিবা ব্র্যান্ডের একটি ডিজিটাল ফটোকপিয়ার মেশিন কেনার জন্য ২০২১ সালের ২৫ মার্চ চুক্তি করা হয় মেসার্স যমুনা ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। ওই ফটোকপি মেশিনটি কেনা হয়েছে দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকায়। অথচ বাজারে প্রকৃত দাম মাত্র ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। আর ভ্যাট, ট্যাক্স ও ঠিকাদারের মুনাফাসহ দাম পড়ার কথা ১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এক মেশিনেই ৬৬ হাজার টাকা অতিরিক্ত বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। দুটি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর কেনার ক্ষেত্রেও একই কাজ করেছে এ কার্যালয়টি। এসএম আকিল আলী নামে ঠিকাদারের মাধ্যমে প্রজেক্টর সরবরাহ নেওয়া হয়। প্রতিটি প্রজেক্টর কেনা ৮৩ হাজার ৯০০ টাকায়। অথচ বাজারে দাম ৪১ হাজার ৫০০ টাকা। এভাবে দুটি প্রজেক্টর কিনতে অতিরিক্ত ৫১ হাজার ৬০০ টাকা বিল করা হয়েছে।
রেলের পাকশীর ডিএসটিই অফিসে ৯০টি সিসি ক্যামেরা কেনায় ঠিকাদারকে অতিরিক্ত পরিশোধ করা হয়েছে ১২ লাখ ৭১ হাজার ৬০ টাকা। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা গেছে- নাটোর, জয়পুরহাট এবং আক্কেলপুর স্টেশনের ৭০টি স্টারলাইট আইপি বেইজড সিসি ক্যামেরা সরবরাহ করেছে মেসার্স এমএম টেকনোলজি অ্যান্ড ট্রেডিং নামে ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান।
এর মধ্যে ৪০টি সিসি ক্যামেরার প্রতিটির দাম দেওয়া হয়েছে ১৯ হাজার টাকা করে। অথচ বাজারে এর দাম ৪ হাজার ৫৫০ টাকা মাত্র। এ ছাড়া ২০টি ফাইভ মেগাপিক্সেল আইপি বেইজড সিসি ক্যামেরা প্রতিটি কেনা হয়েছে ২২ হাজার ৭৯০ টাকা করে। তবে বাজারে এসব ক্যামেরার দাম ৩ হাজার ৫৩০ টাকা।
অডিট প্রতিবেদনের বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক মামুনুল হক বলেন, ‘অডিট রিপোর্টে আপত্তি এলেই যে সবক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে, তা ঠিক নয়। এগুলো বেশির ভাগই সমাধানযোগ্য বিষয়। এ জন্য আমরা অডিট টিমের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভার আয়োজন করেছি। সভায় কর্মকর্তারা নিরীক্ষা দলকে জবাব দেবেন। গ্রহণযোগ্য জবাব দিতে না পারলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’