প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, শীর্ষ রাজনীতিবিদ এবং উন্নয়ন সংস্থাসহ কানাডার সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস। কানাডার পাঠ্য বইয়ে তার গল্প অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।কানাডার সহায়তা চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে তার সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন, বড় বিনিয়োগ দরকার।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া বিপর্যস্ত অর্থনীতির কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, উত্তরাধিকার সূত্রে অন্তর্বর্তী সরকার এমন একটি অর্থনীতি পেয়েছে যেটি বিপুল পরিমাণ ঋণের ভারে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত ছিল। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো দেশের অর্থনীতি ঠিক করা।
দেশে সুশাসন, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তার অন্তর্বর্তী সরকার বিগত সরকারের শাসন আমলে ভেঙে পড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরুদ্ধার এবং শাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনছে।কানাডিয়ান হাই কমিশনার লিলি নিকোলস বলেন, তার দেশের সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং প্রধান উপদেষ্টাকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, কানাডা বাংলাদেশে সার এবং নিত্যপণ্য সরবরাহের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে আগ্রহী।শ্রমিক অধিকার প্রসঙ্গে লিলি নিকোলস বলেন তিনি বলেন, উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে বাণিজ্য অগ্রাধিকার পাওয়া অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে অবশ্যই কল-কারখানায় শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পোশাক ক্রয়কারী ব্র্যান্ডগুলোর উদ্বেগ নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) মানদণ্ডে শ্রম অধিকার বজায় রাখবে।
বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত নৃশংসতা তদন্ত প্রসঙ্গে লিলি নিকোলস বলেন, জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় কানাডা জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সংঘটিত বিপ্লবে বাংলাদেশ নতুন আশার যুগে প্রবেশ করেছে। এগুলো ঐতিহাসিক সুযোগ, এই সুযোগগুলো হয়তো কখনোই ফিরে আসবে না।দেশের নির্বাচনী সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভোটে যাওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী সংস্কার করা হবে।
বিগত সরকারের সময় দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, আগের সরকারের অধীনে ‘নির্বাচন কমিশন নির্বাচন কারসাজি কমিশনে পরিণত হয়।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন কানাডিয়ান হাইকমিশনার।
রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যের জন্য কানাডা ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে জানিয়ে লিলি নিকোলস রোহিঙ্গা জনগণের জীবিকার সুযোগ তৈরির আহ্বান জানান।
কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে কিছু রোহিঙ্গা স্থানান্তরের মাধ্যমে অত্যধিক ঘনবসতি কমানোর করার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।