নিউজ ডেস্ক:: দেশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। আজ মঙ্গলবার মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে ৪৩ ডিগ্রি ৮ ডিগ্রি। এটি দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। অসহনীয় গরমে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিট স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটছে। সারা দেশে হিট স্ট্রোকে এখন পর্যন্ত রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, ঝিনাইদহ, নাটোর, সাতক্ষীরা ও মুন্সিগঞ্জে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরে হিট স্ট্রোকে দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন– উপজেলার বড় হরিশপুরে আব্দুল মান্নান ও নলডাঙ্গা উপজেলায় খাজুরা ইউনিয়নের উজানপাড়া গ্রামের খায়রুল ইসলাম। নাটোরের সিভিল সার্জন ডাঃ মশিউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মুন্সিগঞ্জে হিট স্ট্রোকে দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন– ওমর আলী (৬৫) ও আব্দুল বাতেন মাঝি (৬০)। তাদের বাড়ি জেলার সদর উপজেলায়।
এদিকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ধানের জমিতে কাজ করতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। উল্লাপাড়া উপজেলার সলপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শওকত ওসমান জানান, মঙ্গলবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার তাড়াবাড়িয়া গ্রামে তিন কৃষক ধানের জমি নিরানীর কাজ করতে যায়। এ সময় তাপদাহ ও গরমে তিন কৃষক অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরে তাদের উল্লাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হলে জিল্লুর রহমান (৩৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়। বাকি দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় হিট স্ট্রোকে জাহাঙ্গীর হোসেন ( ৩২) নামের এক গরু ব্যবসায়ী মারা গেছেন। তিনি ব্রহ্মপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। দুপুরে মালিপাড়া থেকে গরু নসিমনে উঠানোর সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জাহাঙ্গীর হোসেন। তাকে প্রথমে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ‘ধারনা করা হচ্ছে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে’।
এছাড়া রাজশাহী ও সাতক্ষীরায় তীব্র তাপপ্রবাহের ‘হিট স্ট্র্রোকে’ আরও দুইজনের মৃত্যু খবর জানা গেছ।
এদিকে টানা তাপপ্রবহের নিয়ে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১৯৭২ সালে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আর আজে যশোর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩.৮ রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা ও পাবনাতেও ৪৩ ডিগ্রি ছিড়িয়েছে। অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং খুলনা ও ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় টানা তাপপ্রবহের কারণে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। মেহেরপুরের অব্যাহত তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। আবহাওয়া অফিসের হিট এ্যালার্ট সতর্কতার মধ্যেও জীবিকার তাগিদে তপ্তরোদ উপেক্ষা কাজ করছে কৃষক, দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষ।
৩ সপ্তাহ ধরে চলমান তাপদাহে নষ্ট হচ্ছে ইরি বোরো ধান, আম লিচু ও শাকসবজি। ফরিদপুরে তীব্র গরমে একটু প্রশান্তি দিতে পথচারিদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্যালাইন ও গামছা বিতরণ করেছে জেলা পুলিশ। বৃষ্টির জন্য দোয়া প্রার্থনা করে রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন জেলায় বিশেষ নামাজের আয়োজন করে পৌরসভা।