লবিং ও ঘুষ ছাড়া মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেয়ার কারণে প্রশংসিত মাদারীপুর জেলার ডিসি ও এসপি

লবিং ও ঘুষ ছাড়া মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেয়ার কারণে প্রশংসিত মাদারীপুর জেলার ডিসি ও এসপি
প্রণব কুমার সাহা, মাদারীপুর প্রতিনিধি : লবিং ও ঘুষ ছাড়া মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেয়ার কারণে প্রশংসিত হয়েছেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ মাসুদ আলম । আগে যেখানে লবিং ও ঘুষ ছাড়া কোনো চাকরি হতো না। এখন মাত্র আবেদন করতে যা খরচ লাগে তাতেই মেধার ভিত্তিতে চাকরি হচ্ছে । এতে উপকৃত হচ্ছে হত দারিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণ-তরুণীরা। মেধার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার কারণে বর্তমান জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মাদারীপুর জেলার সর্বসাধারন জনগন।
জানা গেছে, সম্প্রীতি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও এর অধীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সমূহের সাধারণ প্রশাসনের বিভিন্ন পদে লবিং ও ঘুষ ছাড়া চাকরি দিয়ে নজীর সৃষ্টি করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান । এছাড়াও তার অধীনে আরো যেসকল নিয়োগ হয়েছে তা শতভাগ মেধা যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে হওয়ায় প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই নিজের যোগ্যতায় ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এতে তাদের কোনো যোগাযোগ, লবিং ও ঘুষ বিনিময় করতে হয়নি। শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন ।
অপরদিকে মাদারীপুরে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশের চাকরি পেয়েছেন ২৯ তরুণ-তরুণী। এই চাকরি পেতে অনলাইন আবেদন খরচ বাবদ জনপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১২০ টাকা। গত বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় মাদারীপুর পুলিশ লাইনে নতুন চাকরি পাওয়ায় এই তরুণ- তরুণীদের পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন মাদারীপুর পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ আলম। এতে ২৫ জন ছেলে এবং ৪ জন মেয়ে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেলা পুলিশ। কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হত দারিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে এসব তরুণ-তরুণী। এবং বর্তমান সরকার প্রধানকে ধন্যবাদ জানায়।
জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল ২৯ জনের শূন্য পদের বিপরীতে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং শেষে ১১০০ জন প্রার্থী শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষা শেষে ২০০ জন লিখিত পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেন এবং লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কারীর মধ্যে চূড়ান্তভাবে ২৯ জনকে (২৫ জন ছেলে ও ৪ জন মেয়ে) মনোনীত করে মাদারীপুর জেলা টিআরসি-২০২৪ নিয়োগ বোর্ড। এতে অপেক্ষমাণ রাখা হয় আরও ৫ ছেলে ও ২ মেয়েকে। নিজ যোগ্যতায় ও মেধায় চাকরির ফলাফল পাওয়া মাত্রই ২৫ জন তরুণ-তরুণী আনন্দে বিমোহিত হয়। এ সময় পুলিশের ড্রিল শেড মুহূর্তের মধ্যে পরিণত হয় আনন্দ ও কান্নার মিলনমেলায়। অনেকের নাম ঘোষণার পরপরই দুই নয়ন অশ্রুতে ভিজে যায়। অনেকেই চাকরি পেয়ে আনন্দ উল্লাস করেন।
 এ বিষয়ে মাদারীপুর পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ আলম বলেন, ‘নিজের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছেন ২৯ জন তরুণ- তরুণী। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই নিজের যোগ্যতায় ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এতে তাদের কোনো যোগাযোগ, লবিং ও ঘুষ বিনিময় করতে হয়নি। তাদের মাত্র আবেদন করতে  খরচ হয়েছে ১২০ টাকা। আজকে যারা পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ নতুন সদস্য হলেন তারা সবাই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে। তাদের জন্য রইল অনেক শুভকামনা।’
এসময় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোহাম্মদ কামরুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোঃ মনিরুজ্জামান ফকির, মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আলাউল হাসান, এএসপি (শিবচর সার্কেল) রব্বানী হোসেন, মাদারীপুর সহকারি পুলিশ সুপার শেখ মোঃ মুরসালিন, নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা ছাড়াও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীগণ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::