নিউজ ডেস্ক : বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের সুনির্দিষ্ট অপরাধের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিনা পরোয়ানায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মী আটক হয়েছেন। গেল এক মাসে বিএনপির কত নেতাকর্মী আটক হয়েছেন? বলা হচ্ছে তাদের অনেকেই কারাগারে মারা গেছেন। এ ছাড়া মুখোশপরা বাহিনীও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হামলা করছে। এ অবস্থায় মানবাধিকার পরিস্থিতি আপনি কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনি কি ভুলে গেছেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছিল। আমাদের বিরুদ্ধে ২৫ হাজার ভুয়া মামলা দায়ের করেছিল তারা, যেগুলোর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। সেগুলো আপনারা কি ভুলে গেছেন?২৫ হাজার ভুয়া মামলার বিচার করেছেন কি না, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব মামলার কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ ছিল না। এ কারণে এর অনেকগুলোই বাতিল হয়ে গেছে। ২৩ জুলাই থেকে আজকের তারিখ পর্যন্ত দৈনিক গড় গ্রেপ্তার হলো ১ হাজার ৯৫৬ জন। আর প্রতিদিন প্রায় সমানসংখ্যকই জামিন পাচ্ছেন। আমি মনে করি, যারা অপরাধ করেছেন, তারাই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিনা অপরাধে, বিনা পরোয়ানায় আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আপনি সেই প্রমাণ অবশ্যই দিতে পারবেন না।আসাদুজ্জামান খান বলেন, পুলিশ কিংবা র্যাব যাদের গ্রেপ্তার করেছে, তারা অগ্নিসংযোগ করেছেন। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তারা আমাদের কত নেতাকে হত্যা করেছেন, সেগুলো বুঝি মানবাধিকারের পর্যায়ে পড়ে না! এগুলোকে যদি মানবাধিকারের পর্যায়ে নিয়ে আসা হতো, তাহলে তার একটি সদুত্তর আপনারা পেতেন।এ সময়ে বিএনপিকে প্রধান বিরোধী দল বলায় আপত্তি তুলে মন্ত্রী বলেন, তারা প্রধান বিরোধী দল না। জাতীয় সংসদে তাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। তারা একটি রাজনৈতিক দল, বলুন।২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘাতের কথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেদিন তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ঢুকে গিয়েছিলেন, যা আপনাদের ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে। সেগুলো তো এক-দুজন করেননি, কয়েক হাজার লোক সেখানে ছিলেন। তারা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের ভেতরে ঢুকে পড়েন, পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে পড়েন। তারা পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ ও আনসারকে হত্যা করেন। তাদের হামলায় সাংবাদিকরা পুলিশ হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানে তাদের পেটানো হয়।তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনের পাশ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সভায় আমাদের নারী কর্মীরা যাচ্ছিলেন, তাদের পৈশাচিকভাবে পেটানো হয়। সেগুলো দেখলে আপনার চোখে জল এসে যেতো। প্রশ্ন করার সময় সেগুলো তুলে ধরলে আমার মনে একটু প্রশান্তি আসবে যে, আপনি (আপনারা) একদিকে কথা বলেন না। আপনার চোখ চতুর্দিকে খোলা রাখলে আরও সুন্দর করে প্রশ্ন করতে পারবেন।