স্পোর্টস ডেস্ক : ইশ সোধিকে এলবিডব্লিউ আউট দিলেন আম্পায়ার। খালি চোখে অবিশ্বাস্য মনে হলেও রিভিউতে দেখা গেল স্ট্যাম্প ভাঙতো না বল।বেঁচে গেলেন সোধি। বাংলাদেশ দলের চোখজুড়ে অবিশ্বাস্য, মিচেল ও সোধির আনন্দ। সেটি অবশ্য সাময়িক। সিলেটে পাঁচ বছর পর হওয়া টেস্ট এমনিতেও স্মরণীয় নানা কারণে। নাজমুল হোসেন শান্ত সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন তার টেস্ট অধিনায়কত্বের প্রথম ম্যাচে। সেটিতে যে বাংলাদেশের জয়ই নিয়তি, এখন বলেই দেওয়া যায় বোধ হয়। শেষদিনে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের দরকার আরও ২১৯ রান, বাংলাদেশের তিন উইকেট।সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের ৩১০ রানের জবাবে ৩১৭ রান করে সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৮ রান করেছে বাংলাদেশ। ৩৩২ রানের বিশাল রান তাড়ায় নেমে ৭ উইকেটে ১১৩ রান করেছে নিউজিল্যান্ড।৩ উইকেটে ২১২ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি তারা। কিন্তু সাউদির করা দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৯৮ বলে ১০৫ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংসের ইতি হয় তাতে।তিন অঙ্ক ছোঁয়া এই ইনিংসে রেকর্ড বুকের পাতায়ও নাম তোলেন শান্ত। ১৩তম বাংলাদেশি টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে এই ম্যাচে টস করতে নামেন তিনি। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিনি নেতৃত্বের অভিষেকে ছুঁয়েছেন সেঞ্চুরি। শান্ত ফেরার পরে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী হয়েছিলেন শাহাদাৎ হোসেন দীপু। কিন্তু তিনি বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৯ বলে ১৮ রান করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন দীপু।মুশফিকুরও হন একই রকম আউট। ১১৬ বলে ৬৭ রান করার পর এজাজ প্যাটেলকে সামনে এসে খেলতে গিয়ে হন এলবিডব্লিউ। পরে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। তিন স্বীকৃত ব্যাটারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর হাল ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু তিনি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও অপর পাশের ব্যাটাররা লম্বা সময় সঙ্গ দিতে পারেননি। ২৭ বলে ১০ রান করেন নুরুল হাসান সোহান, ৭ বলে ১০ রান আসে শরিফুলের ব্যাট থেকে। ৭৬ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩২ রানের বড় লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। এই রান তাড়া করে জেতার জন্য রেকর্ড করতে হতো কিউইদের। কারণ এর আগে ৩২৪ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি তারা। ১৯৯৪ সালে পাকিস্তানকে এই রান তাড়া করে হারিয়েছিল তারা, সেটিই তাদের সর্বোচ্চ। দ্বিতীয়টি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই, ২০০৮ সালে তারা ৩১৭ রান তাড়া করে হারায় তিন উইকেটে। এই রান তাড়া করা এমনিতেও নিউজিল্যান্ডের জন্য কঠিনই ছিল। ইনিংস যত এগিয়েছে, তত বেশি স্পষ্ট হয়েছে সেটি। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম উইকেট নেন এই টেস্টের একাদশে থাকা একমাত্র পেসার শরিফুল ইসলাম। সেটিও ইনিংসের প্রথম ওভারেই। তার করা ওভারের শেষ বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। পরের উইকেটটির জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় আরও নয় ওভার। এবার তাইজুল ইসলামের বলে সামনে এসে ডিফেন্স করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন কেইন উইলিয়ামসন। তাইজুলের সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো দল। আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ানই বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হতে পারতেন। রিভিউ নিয়েও পরে বাঁচতে পারেননি তিনি। পরের ব্যাটারদের প্রায় কেউই ভিত শক্ত করে দাঁড়াতে পারেননি। ৮ বলে ২ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে নাঈম হাসানের হাতে ক্যাচ দেন হেনরি নিকোলস। ৩০ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের বিপদ আরও বাড়ে সেট হওয়ার আভাস দেওয়া ডেভন কনওয়ে আউট হলে। ৭৬ বলে ২২ রান করা এই ব্যাটারকে শাহাদাৎ হোসেনের ক্যাচ বানান তাইজুল। এরপর নিউজিল্যান্ডের হয়ে একাই লড়ছেন ড্যারল মিচেল। ৮৬ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত আছেন তিনি। তার সঙ্গী ইশ সোধি ২৪ বলে করেছেন ৭ রান।