নিউজ ডেস্ক : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখার লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে ত্রাণ, অনুদান, নতুন প্রকল্প গ্রহণ স্থগিত রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান পৃথক চারটি নির্দেশনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং রেড ক্রিসেন্টকে এই নির্দেশনা পাঠিয়েছে।স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দিন হতে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল হতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ প্রদান বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না। এ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উল্লিখিত আচরণ বিধিমালার বিধি ১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় হবেন।সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৩ অনুসারে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উম্মোচন করা যাবে না।এছাড়া, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় অনুদান/ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন না করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে ইতঃপূর্বে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত বা প্রদান করা নিতান্ত আবশ্যক হলে জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালযয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখা এবং আচরণ বিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যে, নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান/ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যে সকল ত্রাণ কার্যক্রম পূর্ব হতে পরিচালিত হচ্ছে তা চালু থাকবে।সেই সঙ্গে নির্বাচন সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত নতুনভাবে গৃহীত অনুদান/ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্যও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কোনো এলাকায় অনুদান/ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত নতুন কার্যক্রম গ্রহণ আবশ্যক হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ/জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি হতে নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান/ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যে সকল ত্রাণ কার্যক্রম পূর্ব হতে পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দিন হতে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল হতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোন প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ প্রদান বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না। এ বিধিমালার বিধান লংঘন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্টগণ উল্লিখিত আচরণ বিধিমালার বিধি ১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় হবেন।নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান/ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যে সকল ত্রাণ কার্যক্রম পূর্ব হতে পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।