নিউজ ডেস্ক : এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে ইতোমধ্যেই অতীতের মৃত্যু ও আক্রান্তের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই ডেঙ্গু জ্বরে ৩৯৬ জন মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন সর্বমোট ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন।যা ২০২২ সালের সারা বছরের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু থেকেও বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটলেও, যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করায় ডেঙ্গু ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ইতোপূর্বে ডেঙ্গু রাজধানী কেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮১ জন মারা যান।শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্য থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দুই হাজার ৪২৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকাতে ৭৫১ জন এবং সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) এক হাজার ৬৭৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে আটজন ঢাকাতে এবং ছয়জন সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) মারা যান।এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৯৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ৬৩৯ জন এবং সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ৩৫০ জন মারা যান।চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ তিন হাজার ৪০৬ জন। এর মধ্যে ঢাকাতে ৮৩ হাজার ২২২ জন ও সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) এক লাখ ২০ হাজার ১৮৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।ডেঙ্গুর সংক্রমণ অক্টোবর মাসে কেমন থাকতে পারে জানতে চাইলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, বৃষ্টি শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকবে। অক্টোবর মাসেও দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকবে জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করছেন।ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, আমাদের ডেঙ্গুর উৎস ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গুর যে প্রজনন হচ্ছে সেগুলোকে যদি আমরা ধ্বংস করতে না পারি, তাহলে এডিস মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সম্পৃক্ত হতে হবে। প্রতিটি বাড়ির মালিককে নিশ্চিত করতে হবে তার বাড়ির কোথাও কোন পানি জমে থাকবে না। এটা যদি আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে এডিস মশার বংশ কমে যাবে। বংশ কমে গেলেই ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, অন্যথায় এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন।