প্রণব কুমার সাহা(মাদারীপুর প্রতিনিধি):মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান গত ৩ এপ্রিল ২০২৩ সালে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ পান । যোগদানের পর থেকে মাদারীপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ রাত-দিন তার সেবা পাচ্ছে। জেলার সামাজিক ও মানবিক কাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য জেলাবাসীর কাছে ইতোমধ্যে তিনি ‘মানবিক জেলা প্রশাসক’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
সরেজমিন একাধিক সময় তাকে অনুসরণ-অনুকরণের মাধ্যমে তার কাজের স্বচ্ছতা পাওয়া যায়। সৎ, নির্ভীক, কর্মঠ এবং নিরহঙ্কারী মানুষ তিনি। তিনি যেমন সময়ের প্রতি দায়িত্বশীল, তেমনি কাজের প্রতিও দায়িত্বশীল। তার মতো জেলা প্রশাসক যদি প্রত্যেক জেলায় দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে দেশের চেহারাটাই বদলে যেতো— এমনটাই ধারণা গুণীজনদের। তিনি বর্তমানে এ জেলার সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েও যে আমজনতার মাঝে মিশে যাওয়া যায়— তিনি দেখিয়ে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত তার কর্মদক্ষতা, সততা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে। ক্রমশ তিনি হয়ে উঠেছেন মাদারীপুর জেলাবাসীর আইকন।
সম্প্রতি গত ২৬ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মাদারীপুর জেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মাদারীপুর জেলাকে দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসসহ সকল প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ড মুক্ত রাখবেন। তার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হলে দুদককে ডেকে এনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন । সব ধরনের অন্যায় এবং দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেন। অন্যায় ও দুর্নীতি কারীদের কোনোভাবে ছাড় দেওয়া বা প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান যেসব বক্তব্যে দিয়েছিলেন তার অধিকাংশই কাজ প্রায় তিন মাসের মধ্যে করতে পারায় আজ সুশীল সমাজ, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের কাছে মানবিক জেলা প্রশাসক’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
অপরদিকে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান অল্প কয়দিনের মধ্যে অবৈধ বালু উত্তোলন চক্র ও এর সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন। তার কঠোর নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অন্যান্য এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, কুমার নদে দিন- রাত একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছেন।
অন্যদিকে দালালচক্র রুখতে কঠোরভাবে মালিকানা যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যে দিয়ে মাদারীপুর ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার কর্মকর্তারা ডিসি অফিসের পরিবর্তে ক্ষতিগ্রস্থদের এলাকায় এসে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের গোয়ালকান্দা মৌজায় ও পদ্মা সেতু এপ্রোচ সড়ক প্রকল্পের কুতুবপুর মৌজায় ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ২২ জনের মাঝে ১ কোটি ৩ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়। এর আগে একই প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আরও ২ কোটি ১৪ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়। এ নিয়ে ২ প্রকল্পে মোট ৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ চেক বিতরণ করা হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান এর জন্য। জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
এছাড়াও সরেজমিনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গেলে কথা হয় দুই জন অবসরে যাওয়া ব্যক্তির সাথে। তারা বলেন, আমাদের অবসরে যাওয়া ফাইল দীর্ঘদিন আটকা ছিল। নতুন ডিসি স্যার এসে আমাদের ফাইলে সই করে দিয়েছে । শুধু আমাদের ফাইল নয় তার টেবিলে থাকা সমস্ত ফাইল সই করে দিয়েছে । তার মতো বড় মনের মানুষ আমরা কম দেখেছি । তিনি কোনো মানুষকে হয়রানি করেন না। এছাড়াও কথা হয় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা- কর্মচারীর সাথে । তাদের সবার মুখে ছিল একই কথা অন্যায় ও দুর্নীতি যে করবে তাকে ডিসি স্যার কোনোভাবে ছাড় দেবে না। তারা আরো বলেন, আমরা তার সাথে কাজ করে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছি তিনি কাউকে হয়রানি করবে না। অন্যদিকে জেলার ট্রাফিক ব্যবস্থা, বাল্যবিবাহ, চিকিৎসাসেবা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে ডিসি স্যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।