নিউজ ডেস্ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতিসংঘের সহযোগিতার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়ে সরকারের কোনো আপত্তি নেই বলেও জানান তিনি।সোমবার (৩ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ড. মোমেন বলেন, নির্বাচনে পর্যবেক্ষকদের ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যদিও অনেক উন্নত দেশে এগুলো নেয় না। কিন্তু আমাদের এটা নিতে কোনো আপত্তি নেই। আমরা স্বাগত জানাই। তারা এসে দেখুক, আমাদের দেশে কত সুন্দর স্বচ্ছ; কত আনন্দঘনময় পরিবেশে নির্বাচন হয়। ওদের দেশে এত আনন্দময় পরিবেশে নির্বাচন হয় না।বিদেশি পর্যবেক্ষকরা বাংলাদেশে নির্বাচন দেখে শেখার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (বিদেশি দেশগুলো) দেখে শিখুক।নির্বাচনে জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতা বাংলাদেশ নেবে কিনা জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে সংস্থাটির কোনো সহযোগিতা চায় না। তিনি বলেন, জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, আমরা যথেষ্ট পরিপক্ক। নির্বাচন করার জন্য যেসব ইনস্টিটিউশন দরকার সুন্দর স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সেই ইনস্টিটিউশন আমরা মোটামুটি তৈরি করেছি।ড. মোমেন বলেন, আমরা স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি করেছি। বায়োমেট্রিক ভোটার তালিকায় যাতে কোনো ধরনের ফ্রড বা ভুয়া ভোট না হয়। আমরা একটা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন তৈরি করেছি। তারা যথেষ্ট সক্ষমতা রাখে তাদের কাজে। সেজন্য আমাদের অন্যদের কোনো সাহায্যের প্রয়োজন নেই।জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে প্রথম আলোর সাংবাদিক গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গটি আসে। এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, আমরা বলেছি, আমাদের তথ্যমতে তিনি গ্রেপ্তার হন; শিশুকে ব্যবহার করার জন্য। শিশুকে নিয়ে অপব্যবহার করেছেন। দ্বিতীয় ইস্যু হলো-তিনি আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে তামাশা করেছেন। আমদের চেতনার সবচেয়ে বড় ধন স্বাধীনতা। ওটাকে নিয়ে তামাশা করবেন, এটা কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না।ধ করে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পার পাওয়া যাবে না জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকের নাম দিয়ে অপরাধ করবেন, এটা গ্রহণযোগ্য হবে না। অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতে পাবে। সাংবাদিক হলেও অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে। আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চাই। কিন্তু কেউ অপরাধ করে পার পাবেন না।সাংবাদিক শামসুজ্জামান ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিবৃতিতে কোনো সোর্স থেকে শিশু নির্যাতনের বিষয়টি যুক্ত করা হলো, জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, আমরা ছবি দেখেছি না। আপনারা ছবি দেখেছেন না? শিশু নির্যাতনের জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে অর্থ কমছে, এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা বলেছি, যারা ওয়াদা করেছেন, তাদের কাছ থেকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে অর্থ সংগ্রহ করেন।রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রথম দিন থেকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, এখনও করে যাচ্ছে। তাদের কোনো গাফিলতি নেই। কিন্তু অনেক দেশই আগে অনেক সাহায্য করেছে, এখন অনেক কমিয়ে দিয়েছে।বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ গুরুত্ব হারাচ্ছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, মনোযোগ যেন থাকে আমরা বিভিন্নভাবে এ ইস্যুটা তুলে ধরেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র এটার ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছে।সম্প্রতি জার্মানভিত্তিক ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, র্যাবকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেনের ভাষ্য, ‘এটা হাসির খোরাক আরকি’। তারা (র্যাব) রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার হচ্ছে না। নিরাপত্তার উদ্দেশে ব্যবহার হচ্ছে র্যাব।