নিউজ ডেস্ক : রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের হাতে থাকা লাঠি রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে কেড়ে নিচ্ছে পুলিশ। এ সময় নেতাকর্মীদের নিরুপায় হয়ে লাঠির মাথায় লাগানো জাতীয় ও দলীয় পতাকাসহ দলের বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার খুলে নিয়ে পুলিশের হাতে লাঠি তুলে দিতে দেখা গেছে।শনিবার (২৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর-পীরগাছা সড়কের হাউদারপাড় নামক স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে নেতাকর্মীদের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নেওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হবে দুপুর ২টায়। কিন্তু পরিবহন বন্ধ থাকায় বিকল্পভাবে নেতাকর্মীরা আগে থেকেই আসতে শুরু করেছেন। শনিবার ভোর থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে ঐতিহাসিক কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে আসছেন নেতাকর্মীরা। রংপুর নগরীর প্রবেশের সব পথ দিয়েই মিছিল আসছে বিএনপির সমাবেশস্থলে।এর আগে গত তিন দিন থেকে আসা নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে মাঠের অর্ধেকাংশ ভর্তি হয়ে যায়। অনেকে আবার সমাবেশস্থল ছাড়াও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠ বিভিন্ন স্লোগানে মুখর হয়ে উঠছে। পরিবহন ধর্মঘট উপক্ষো করে সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন নেতাকর্মীরা। দলীয় প্রতীক ধানের শীষ ছাড়াও ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে আসা নেতাকর্মীরা এখন সমাবেশ শুরুর অপেক্ষা করছেন।মাঠে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও রংপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক ছাড়াও রাজশাহী বিভাগের বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দলীয় লোকজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। যাদের বেশিরভাগই ভোর হওয়ার আগেই সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেছেন।মাঠে সভা মঞ্চের কাছাকাছি দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে অনেকে বসে আছেন।রংপুর মহানগরীর শাপলা চত্বর, গ্রান্ড হোটেল মোড়, জাহাজ কোম্পানি মোড়, পায়রা চত্বর, মেডিকেল মোড়, ডিসির মোড়, রাধাবল্লভ, কাচারি বাজার, সরকারি কলেজ রোড হয়ে সমাবেশস্থল কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। দলে দলে হেঁটে হেঁটে মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে আসছেন তারা।রংপুর মহানগর বিএনপির নেতারা বলছেন, দুপুর ১২টার আগেই সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে সভামঞ্চসহ আশপাশে মাইক লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। মিছিল নিয়ে আসার পথে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি তাদের। তবে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তারা।নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্থানে গুলিতে দলের নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদসহ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রংপুরে তাদের চতুর্থ বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে।গণসমাবেশের প্রস্তুতির বিষয়ে রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন বাধা, ধর্মঘট উপেক্ষা করে সমাবেশস্থলে দলীয় নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে জনস্রোতে নেমেছে। আশা করছি কয়েক লাখ মানুষের জনসমাগমে সরকারের সব বাধা ভেস্তে যাবে।সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।গণসমাবেশে যোগ দিতে ইতোমধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ, যুগ্ম মহাসচিব হারুন উর রশিদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব (দুলু), সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, কৃষক দলের মহাসচিব শহিদুল ইসলাম (বাবুল), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনোকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ জুয়েলসহ প্রমুখ রংপুরে এসে পৌঁছেছেন।