নিউজ ডেস্ক : সরকারের বিরুদ্ধে যারা যুগপৎ আন্দোলন করতে ইচ্ছুক সেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে বিএনপি। আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা ঠিক করতেই এই সংলাপ করা হবে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।জানা গেছে, এই সংলাপে চূড়ান্ত রূপরেখা ঠিক করে লিঁয়াজো কমিটি গঠন করা হতে পারে। প্রথম দফায় যেসব দলের সঙ্গে সংলাপ করা হয়েছিল সেইসব দলের সঙ্গেই দ্বিতীয়দফা সংলাপ হবে। তবে প্রথম দফার সংলাপে প্রকাশ্যে কোনো বৈঠক হয়নি ২০দলীয় জোটের সবচেয়ে বড় শরীক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে। এবারও প্রকাশ্যে তাদের সঙ্গে সংলাপ হবে না বলে জানা গেছে।যদিও সংলাপ চলাকালে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, যেহেতু জামায়াতে ইসলামী ২০দলীয় জোটে আছে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে একমত সেহেতু তাদের সঙ্গেও বৈঠক হবে। কিন্তু তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে বৈঠক না হওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ২০দলীয় জোটের সমন্বয়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াতের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কবে কোথায় হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। পক্ষ থেকে প্রশ্ন ছিল সবদলের সঙ্গে বৈঠকের সময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য মিডিয়াকর্মীদের আমন্ত্রণ করা হলেও জামায়াতের সঙ্গে বৈঠকের সময় তেমনটি কেন করা হয়নি। এর জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এটা আমার একার বিষয় না। দলের পক্ষ থেকে যে ধরনের সিদ্ধান্ত আসবে সেটাই আমরা করে থাকি। এদিকে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক শনিবার (১ অক্টোবর) জানান, রোববার (২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় তার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির একটি প্রতিনিধি দল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যাবেন। সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে তাদের বৈঠক হবে। বৈঠকে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুন, অতিরিক্ত মহাসচিব নুরুল কবির পিন্টু, যুগ্ম-মহাসচিব সোহেল মোল্লা, আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাহবুবুর রহমান শামিম, উত্তরের সেক্রেটারি জামাল হোসেন, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু হানিফ ও উত্তরের সেক্রেটারি আবু ইউসুফ উপস্থিত থাকবেন বলেও তিনি জানান। সরকারবিরোধী বৃহত্তর যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে চলতি বছরের ২৪ মে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম সংলাপ শুরু করে বিএনপি। প্রথম দফার ওই সংলাপে ২৩টি দল অংশ নেয়। এর মধ্যে ছিল জেএসডি, গণফোরামের একাংশ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ইসলামী ঐক্যজোট, কল্যাণ পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), লেবার পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ জাতীয় দল, মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, সাম্যবাদী দল, ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি একাংশ (এনডিপি), ইসলামিক পার্টি, পিপলস লীগ, ন্যাপ-ভাসানী ও বাংলাদেশ ন্যাপ (একাংশ)। তখন সবদলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে একমত পোষণ করে।বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফার সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যেসব প্রস্তাবনা এসেছিল- সেগুলোর সঙ্গে দল সরকারে গেলে কী কী পদক্ষেপ নেবে এবং নির্বাচনের আগে কোন কোন ইস্যুতে যুগপৎ আন্দোলন করা হবে-সেগুলো নিয়ে কয়েকটি পয়েন্টে আলোচনার জন্য লিখিত এজেন্ডা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে নির্বাচন-পরবর্তী সব দল ও বিশিষ্টজনদের নিয়ে জাতীয় সরকার, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ও প্রশাসন, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা রক্ষায় কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ সরকার কী ধরনের হবে, তার কাঠামো কী হতে পারে তাও চূড়ান্ত করা হবে।