১৬ ঘণ্টা পর মুখ খুললেন রহিমা বেগম

১৬ ঘণ্টা পর মুখ খুললেন রহিমা বেগম

নিউজ ডেস্ক : বহুল আলোচিত ‘নিখোঁজ’ থাকা রহিমা বেগম অবশেষে মুখ খুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, নিজ বাসার নিচ থেকে ৪/৫ জন দুর্বৃত্ত মুখে কাপড় বেঁধে তাকে অপহরণ করেছিল।উদ্ধার হওয়ার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে সন্তানের মুখোমুখি করার পর তিনি মুখ খোলেন।  পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অব বাংলাদেশ (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান দুপুর আড়াইটার দিকে এ তথ্য জানান।পুলিশ সুপার বলেন, শনিবার ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর থেকে কোনো কথাই বলছিলেন না রহিমা বেগম। বেলা ১টার দিকে মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ তাকে চার মেয়ের মুখোমুখি আনা হয়। এসময় মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তিনি অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন।কান্নারত অবস্থায় মেয়েরা মাকে বলতে থাকেন, আমাদের ছেড়ে আর কোনোদিন কোথাও যাবে না! আমাদের জমি দরকার নেই। মাকে দরকার, তোমাকে দরকার!জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, রহিমা বেগমকে অপহরণের পর অজ্ঞাতস্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন। জমি-জমার বিরোধ থাকা কিবরিয়া, মহিউদ্দিনসহ কয়েক ব্যক্তি তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তাকে একহাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেন।রহিমা বেগমের দাবি, তিনি কিছুই চিনতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে গোপালগঞ্জের মুকছেদপুর হয়ে পূর্ব পরিচিত ভাড়াটিয়ার ফরিদপুরের বোয়ালখালী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে যান। কিন্তু তার কাছে কোনো মোবাইল নম্বর না থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি।পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, আমরা রহিমা বেগমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।এর আগে ফরিদপুরের বোয়ালমারি থেকে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে উদ্ধারের পর রহিমা বেগম (৫৫) ও আরও দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারির কুদ্দুসের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। কুদ্দুস এক সময় খুলনার জুট মিলে চাকরি করতেন ও রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে ছিলেন।রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সোনাডাঙ্গা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে রহিমা বেগমকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে আনা হয়।উল্লেখ্য, খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। সেসময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘসময় পরও তার খোঁজ না পাওয়ায় ঘটনার দিন রাত সোয়া ২টায় দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা করেন তার মেয়ে আদুরী।এরপর পুলিশ ও র‌্যাব ছয়জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হয়।এদিকে, গত শুক্রবার দুপুরে রহিমা বেগমের মেয়েরা ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত মহিলার লাশকে ‘নিজেদের মায়ের লাশ’ দাবি করলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। উদ্ধার হওয়া লাশের পরনের কাপড় দেখে প্রাথমিকভাবে নিজের মায়ের লাশ বলে জানায় রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান। তবে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন উদ্ধার হওয়া নারীর লাশ অর্ধগলিত ছিল দাবি করে লাশের ডিএনএ টেস্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

১৬৯ কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করলো রাসিক

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচি-৩ পরকল্পের চেক বিতরণ