ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা স্বপ্নাকে ১০ মিনিটেই উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন সামসুন্নাহার জুনিয়র। রঙ্গশালার ভেজা মাঠকে মনে হচ্ছিল কোনও পাড়ার মাঠে হচ্ছে সাফের ফাইনাল। কর্দমাক্ত মাঠে ঠিক মতো দৌড়াতে পারছিলেন না ফুটবলাররা। ১৩ মিনিটে বদলী ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার জুনিয়রের গোলে লিড নেয় বাংলাদেশ। ডান দিক থেকে মনিকার ক্রসে শামসুন্নাহার জুনিয়রের ডানপায়ের ভলি গোলকিপারের চোখ ফাঁকি দিয়ে দূরের জাল কাঁপায়। আগের ম্যাচে স্বপ্নার পরিবর্তে ঋতুপর্ণা চাকমাকে নামিয়েছিলেন কোচ ছোটন। এই ম্যাচে মাঠে নামালেন শামসুন্নাহারকে। তিনিও কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়ে সুপার সাব হিসেবে গোল করলেন।প্রথমার্ধে তেমন কোনও সুযোগই তৈরি করতে পারেনি নেপাল। তাদের আক্রমণগুলো বেশ দক্ষতার সঙ্গে ঠেকিয়ে দিচ্ছিল বাংলাদেশের ডিফেন্স লাইন। তবে ৩৬ মিনিটে বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। রুপনার কৃতিত্বে গোল পায়নি নেপাল। আনিকা বাসনাতের ফ্রি-কিক কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বাংলাদেশ কিপার। কর্নার থেকে গোলের সুযোগ ছিল নেপালের। তবে গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন মাসুরা পারভীন।ম্যাচের ৪১ মিনিটে ভুল পাস পেয়ে সাবিনা আড়াআড়ি পাস বাড়ান আনমার্কড কৃষ্ণাকে। বক্সে ঢুকে ঠাণ্ডা মাথায় বাঁ পায়ের নিঁখুত প্লেসিংয়ে ব্যবধান বাড়ান কৃষ্ণা।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে নেপাল। আক্রমণের ধার বাড়ায় তারা। একের পর এক আক্রমণে বাংলাদেশের রক্ষণের কঠিন পরীক্ষাই নিচ্ছিলেন তারা। নিজেদের সেরা স্ট্রাইকার সাবিত্রা ভান্ডারিকে মাঠে নামান কোচ কুমার থাপা। একের পর এক আক্রমণে ৭০ মিনিটে সফলতার মুখ দেখে নেপাল। অনিতা বাসনেতের গোলে ব্যবধান কমায় তারা। বক্সের বাইরে থেকে সতীর্থের আড়াআড়ি পাস পেয়ে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান অনিতা।
তবে নেপালের আক্রমণ সামলে, প্রতি আক্রমণে গোলের ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করছিল বাংলাদেশও। সেই সুবাদে ৭৭ মিনিটে কৃষ্ণার দ্বিতীয়বার লক্ষ্যভেদে আবারও চালকের আসনে বসে বাংলাদেশ। এই গোলের পরই জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। প্রায় মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের থ্রু পাস বক্সে ঢুকে আয়ত্বে নিয়ে ডানপায়ের প্লেসিংয়ে ব্যবধান ৩-১ করেন কৃষ্ণা।
প্রথমবারের মতো নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ার আনন্দকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়া। পুরো আসরে বাংলাদেশ গোল হজম করল মাত্র একটি। অন্যদিকে ফাইনালের আগ পর্যন্ত নিজেদের জাল অক্ষত রেখেছিল নেপালও।
দেশের নারী ফুটবল এক নতুন জাগরণের সুর উঠেছে। এই সুরেই একদিন বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখছেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা।