আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের কাছে ‘আয়রন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রিতে ইসরায়েলের অনীহা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার (২০ মার্চ) ইসরায়েলের পার্লামেন্টে দেওয়া ভার্চ্যুয়ালি ভাষণে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে জেলেনস্কি বলেন, প্রত্যেকে জানেন, আপনাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেরা। আপনারা নিশ্চিতভাবে আমাদের জনগণকে সাহায্য করতে পারেন। ইউক্রেনীয় ইহুদিদের জীবন বাঁচাতে পারেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ক্রেমলিনের মুখের ভাষা শুনুন। তারা নাৎসিদের পরিভাষা ব্যবহার করছে। ইহুদি প্রশ্নে চূড়ান্ত সমাধানের কথা আপনাদের ভালোই স্মরণ আছে। মস্কো এখন কী বলছে শুনুন। চূড়ান্ত সমাধানে এখন সেসব পরিভাষা আবার ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সেটা এখন আমাদের লক্ষ্য করে ইউক্রেন বিষয়ে। তারা দাপ্তরিক ওয়েবসাইট ও গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে এ কথা বলছে।তিনি উল্লেখ করেন, ১৯২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যেদিন নাৎসি পার্টির যাত্রা ঘোষণা করেন অ্যাডলফ হিটলার, ১০২ বছর পর সেদিনেই ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া।ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা পৃথক দেশ ও পুরোপুরি ভিন্ন বাস্তবতায় আছি, কিন্তু আমরা একাই হুমকি মোকাবিলা করছি। নাৎসিরা লাখো মানুষকে হত্যা করেছে, আর রাশিয়া মাত্র কয়েক সপ্তাহে হাজারো মানুষ হত্যায় সফল হয়েছে। তারা বাবি ইয়ার ম্যাসাকার স্থাপনা ও পুণ্যার্থীদের শহর উমানে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন কেবলই একটি সামরিক অভিযান নয়, যেমনটা মস্কো বলে আসছে। এটা সর্বাত্মক ও অন্যায্য যুদ্ধ, যার উদ্দেশ্য আমাদের জনগণকে ধ্বংস করে দেওয়া। রাশিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, আর গোটাবিশ্ব তা কেবলই দেখছে। তাই আমাদের আর তোমাদের (ইহুদিদের) ইতিহাসকে আমি একইভাবে দেখতে ও তুলনা করতে পারি। ’এদিকে পরে দেওয়া নিয়মিত রাত্রিকালীন ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের শান্তি আলোচনার জন্য জেরুজালেম ভালো ভেন্যু (স্থান) হতে পারে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে শীর্ষপর্যায়ের সংলাপ আয়োজনে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।জেলেনস্কি বলেন, সংলাপ আয়োজনের একটি উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। আমরা তার এ প্রচেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞ। আগে হোক, পরে হোক আমরা খুব সম্ভবত জেরুজালেমে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারবো।ইউক্রেন সংকটে সতর্কভাবে ভারসাম্যপূর্ণ নীতি মেনে চলার চেষ্টা করছে ইসরায়েল। মস্কোকে না খেপিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। শান্তি আলোচনা আয়োজনেরও চেষ্টা করছে ইসরায়েল।