নিউজ ডেস্ক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশকে ঘিরে ধরেছে অদ্ভুত এক রহস্যময় আঁধার। রাষ্ট্র ও সরকারে কোথায় কি হচ্ছে সব কিছুতেই অস্পষ্টতা-রহস্যময়।বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।এসময় তিনি বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে কাঁথা বালিশ ফ্যাক্টরি পরিদর্শনের যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল তা-কি ভুল ছিল প্রশ্ন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ওই প্রজ্ঞাপন কি প্রত্যাহার করা হয়েছে? আইজিপির নাম কি ভুলে দেয়া হয়েছিল? নাকি তাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ছিল? বড় প্রশ্নটি হচ্ছে রাষ্ট্র-সরকারের অভ্যন্তরে হচ্ছেটা কি? সরকারের নাটাই কার হাতে?তিনি আরও বলেন, জার্মানিতে কাঁথা বালিশ চাদরের ফ্যাক্টরি পরিদর্শনের নামে পুলিশ প্রধানসহ তিন কর্মকর্তার সফর সংক্রান্ত সরকারি আদেশ গত ৭ ফেব্রুয়ারি জারি হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছিল, বালিশের কাভারসহ ডাবল সাইজের এক লাখ পিস বিছানার চাদরের শিপমেন্ট নিশ্চিত করতে এই তিন কর্মকর্তা ৯ দিনের জন্য জার্মানি যাচ্ছেন। পাশাপাশি তারা ফ্যাক্টরি একসেপ্টেন্স টেস্টেও (এফএটি) অংশ নেবেন।রিজভি বলেন, ওই প্রজ্ঞাপন নিয়ে চরম বিতর্ক দেখা দেওয়ায় পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে আরেকটি প্রেসনোট দিয়ে বলা হয়েছিল এ নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই। যা হয়েছে নিয়মমাফিক হয়েছে। জিওতে শব্দগত ভুলের কারণে বিভ্রান্তির সৃষ্টি। ১২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ তিন সদস্যের জার্মানি সফর নিয়ে বিভ্রান্তি ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হলেও মূলত চাদর ও বালিশের কাভার নেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশ থেকেই। তবে এসব প্রস্তুতের জন্য রঙ আসবে জার্মানির একটি কোম্পানি থেকে। কার্যত ওই রঙয়ের গুণগত মান দেখতেই জার্মানি যাচ্ছেন আইজিপিসহ ওই তিন সদস্য।রিজভী বলেন, প্রচণ্ড সমালোচনা ও চাপের মুখে মঙ্গলবার (১৫ফেব্রুয়ারি) পুলিশ সদর দফতর থেকে আবারও বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে কাঁথা বালিশ চাদর কেনার ইস্যু নিয়ে পুলিশ প্রধানকে ঘিরে যা কিছু বলা হচ্ছে সবই ‘বানোয়াট বিভ্রান্তিকর। জার্মানি বিছানার চাদর উৎপাদন ও রপ্তানিকারক কোনো দেশ নয়, তারা ভারী শিল্পের দেশ। সঙ্গত কারণে আইজিপির চাদর, বালিশের কাভার ক্রয়ের জন্য জার্মানি যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। ’জাতিসংঘ থেকে গুম হওয়া সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ পর্যালোচনা করে জরুরি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। দুরাচার অবৈধ সরকারকে আতংক ঘিরে ফেলেছে। স্বয়ংক্রিয় ভোটের পররাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী গুম-খুন নিয়ে প্রলাপ বকছেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যবসা বাণিজ্য আমদানি রফতানিতে বিরূপ প্রভাব পড়া শুরু করেছে। ক্ষণ গণনা চলছে নিশিরাতের সরকারের বিদায়ের। আওয়ামী দু:শাসনের ভয়ংকর শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে দেশবাসীর আসন্ন দুর্বার আন্দোলনের আশংকায় সরকার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তবে সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই সরকার এই মুহূর্তে পদত্যাগ না করলে মিটিং-মিছিল-স্লোগান প্রতিরোধে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।তিনি বলেন, আমরা সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, গুম-অপহরণ-দুঃশাসন চালিয়ে যেভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন তার পরিণতি হবে ভয়ংকর। সেদিন বেশী দূরে নয় যেদিন গুম-খুন অপহরণের শিকার পরিবারগুলোর শোকার্তরা কাফনের কাপড় পরে স্বজনদের খোঁজে গণভবনের দিকে রওনা দেবে। দেশের প্রতিটি শোকার্ত মানুষের ধারণা প্রতিটি গুমের হুকুমের প্রধান আসামি বসে আছেন গণভবনে। গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ গণতন্ত্র হত্যার বিচার এদেশেই হবে। কারণ এদের জন্য মানবতা ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে পরেছে।