এ সময় নৌকা থেকে সাত বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে মাদারীপুরের জয় তালুকদার (২২), ইমরান হোসেন (২২), মস্তফাপুরের জহিরুল ইসলাম (২২), কেন্দুয়া ইউনিয়নের ঘটকচরের সাফায়েত হোসেন (২৩) ও সদরের বাপ্পী (২১) রয়েছেন।
পশ্চিম পেয়ারপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মৃত ইমরান হোসেনের পরিবারে উৎকণ্ঠা। ভ্যানচালক বাবা পরিবারের সুখের আশায় ধার-দেনা করে আট লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। এরপর একই এলাকার সামাদ বেপারী নামে এক দালালের মাধ্যমে গত ২৫ অক্টোবর বাড়ি থেকে লিবিয়া হয়ে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেন। ইমরানের পরিবার এখনো বিশ্বাস করছে না যে তাদের ইমরান মারা গেছেন।
ইমরানের চাচা সোবহান হাওলাদার বলেন, গত ২২ জানুয়ারি ইমরান বাড়িতে ফোন করেছিল। এরপর থেকে গত নয়দিন ধরে তার কোনো খোঁজ নেই। আজ শুনতে পেলাম, ইমরান মারা গেছে। বিশ্বাস হচ্ছে না। পোলার লাশটা সরকারের কাছে ফেরত আনার দাবি করছি।
ইমরানের বোন আকাশী আক্তার বলেন, অনেক আশা করে ইতালির উদ্দেশে বাড়ি ছাড়ে আমার ভাই। অনেকেই তো গেছে। সেই আশায় সেও বাড়ি ছাড়ে। আমার ভাই মইরা গ্যাছ বিশ্বাস হইতাছে না।
এদিকে মৃত অন্য তরুণদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তারা গণমাধ্যম কর্মীদের এড়িয়ে যাচ্ছেন। তাদের অনেকেরই দাবি, তাদের সন্তানরা এখনো বেঁচে আছেন। তারা মৃত্যুর খবরটিকে মিথ্যা বলে ধারণা করছেন।
পেয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান লাভলু তালুকদার বলেন, আমার এলাকায় কিছু দালাল আছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও আছে। বিচার না হওয়ায় দালালচক্র ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কেউ মারা গেলে, তার পরিবারকে কিছু টাকা দিয়ে আর ভয়-ভীতি দেখিয়ে দালালরা মীমাংসা করে নেন। এ কারণে অবৈধ পথে বিদেশযাত্রা কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, মাদারীপুরের যে পাঁচ তরুণ ইতালিতে মারা গেছেন, আমরা তাদের লাশ দেশে আনার চেষ্টা করছি। ইতালি দূতাবাসের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা কিছু কাগজপত্র জমা দিতে বলেছে। সেগুলো জমা দিলে আশা করি, লাশ ফেরত পাব।