আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে ২৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ৩৯টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করেছি। পর্যায়ক্রমে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। মীরসরাই, সোনাগাজী ও সীতাকুন্ড উপজেলায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’ গড়ে তুলছি।আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে এবং বর্তমানে ৭৯টি পিপিপি প্রকল্পে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৬ প্রণয়ন করেছি এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি। ২০১৯ সাল থেকে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে ৩৫টি সংস্থার ১৫৪টি বিনিয়োগ সেবা অনলাইনে প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করছি।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক কুটনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অর্থনৈতিক কূটনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছি। দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি, মুক্তবাণিজ্য চুক্তি এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে কাজ করছি। ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর করেছি।তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৮টি দেশে একতরফা শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পাচ্ছে। ৩৬টি দেশের সঙ্গে দ্বৈত-কর আরোপ পরিহার চুক্তি বলবত আছে। আমরা বিভিন্ন বাণিজ্য জোটের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। আমরা বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে অবকাঠামোসহ সকল নীতিগত সহায়তা দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে এখন উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। আমরা ‘এসডিজি প্রগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছি। দেশে ৯৯.৯৯ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের ১২ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লব থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা আহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের আইটি পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য নিয়েছি।

বিভিন্ন মেগা প্রকল্প নির্মাণের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ করেছি। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। ঢাকায় মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, সৈয়দপুরে আঞ্চলিক বিমানবন্দর, কক্সবাজারে আরও একটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল এবং মাতারবাড়ি ও পায়রায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।করোনা মহামারির প্রতিঘাত নিরসনে ১ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি জানান, অর্থনীতির আকার এখন ৪১১ বিলিয়ন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু আয় ২,৫৫৪ ডলার।অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান; সৌদি আরবের ট্র্যান্সপোর্ট অ্যান্ড লজিস্টিক সার্ভিস বিষয়ক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার সালেহ নাসের এ আল-জাসের; ভারতের কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, কনজুমার অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ফুড অ্যান্ড পাবলিক ডিসট্রিবিউশন অ্যান্ড টেক্সটাইল মন্ত্রী পীযূষ গয়াল; চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার রেন হংবিন; জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা টারো; ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এশিয়া এবং প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আলফনসো গার্সিয়া মোরা; বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউএএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেরেমি উয়ুর্গেন্স; সিংগার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও তুরস্কের কনজুমার ডুরাবল্লের প্রেসিডেন্ট ড. ফতেহ কামাল ইবিকলিওগ্লু; বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন