খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা
নিউজ ডেস্ক  : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার বিবরণ দিয়েছেন তার সাবেক প্রেস সেক্রেটারি মারুফ কামাল খান সোহেল।শনিবার (২০ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে মারুফ কামাল খান তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস দেন।তার লেখাটি হুবহু বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।‘খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা’ শিরোনামে মারুফ কামাল লেখেন-খালেদা জিয়ার অবস্থা গুরুতর। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এবারে ভর্তি করাবার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অবস্থার এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উন্নতিই হয়নি। আসলে বর্তমানে তার যে অবস্থা তাতে দেশে চিকিৎসার সুযোগ নাই বললেই চলে। জীবন বাঁচাতে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতেই হবে। চিকিৎসকরা তাকে অনতিবিলম্বে সিঙ্গাপুর কিংবা থাইল্যান্ডে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।তার রোগ ও শারীরিক অবস্থার কথা প্রচার করা না হলেও আমি সাংবাদিকতার কলাকৌশল প্রয়োগে বিভিন্নভাবে খোঁজ-খবর করে নিশ্চিত হয়েছি যে, তিনি তার পুরনো জটিল রোগগুলো ছাড়াও ডিকমপেন্স্যাটেড লিভার সিরোসিস-এ আক্রান্ত হয়েছেন। এটা সম্ভবত NASH (Non alcoholic steato hepatitis) অর্থাৎ ফ্যাটি লিভার থেকে হয়ে থাকতে পারে। এখন এর দুটি মাত্র চিকিৎসা- স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন থেরাপি এবং তাতেও কাজ না হলে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা। এর কোনোটিই বাংলাদেশে সম্ভব নয় এবং করার সুযোগ নেই।আমি যতদূর জেনেছি, শরীর থেকে রক্ত যেতে যেতে তার হিমোগ্লোবিন একেবারে কমে গেলে এবং রক্তবমি হতে থাকলে তাকে এবার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডাক্তাররা এন্ডোস্কপি করে তার লিভার সিরোসিস শনাক্ত করেন। তার শরীরে দফায় দফায় রক্ত দেওয়া হয় এবং তার বড় হয়ে যাওয়া রক্তনালী এন্ডোস্কপির মাধ্যমে oesophageal Band ligation করা হয়েছে এবং সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এর বেশি কিছু বাংলাদেশের ডাক্তারদের করার নাই বলেই জানানো হয়েছে।খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ এবং হার্ট, কিডনি ও চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি নিয়মিত চিকিৎসাধীন ও চিকিৎসকদের তদারকিতে ছিলেন। তাকে জেলে নেওয়ার পর সব বন্ধ হয়ে যায়। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হতে থাকে, তার অবস্থারও গুরুতর অবনতি ঘটে। বারবার দাবি সত্ত্বেও তার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত হাসপাতালে নিতে দেওয়া হয়নি। এ অভিযোগ বরাবর করা হয়েছে এবং এটি এখন পুরনো।পরিস্থিতি খুব জটিল হয়ে দাঁড়ালে এবং খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির যথেষ্ট অবনতি হলে সরকার তাকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা করাবার সুযোগ দেয়। কিন্তু যখন দেওয়া উচিত ছিল তখন না দিয়ে তারা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতির জন্য অপেক্ষা করেছে বলেই খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে।এরপর তিনি করোনায় আক্রান্ত হলে তার শরীরের অন্যান্য অর্গান ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রোগগুলোও আরো জটিল হয়ে ওঠে। এবার শনাক্ত হলো আরও জটিল ব্যাধি- লিভার সিরোসিস। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে তার চিকিৎসা অসম্ভব। এখন বিদেশে সবগুলো রোগের সমন্বিত চিকিৎসার সুযোগ সম্বলিত কোনো হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে না পারলে খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়বে। যেকোনো সময়ে লিভার ফেলিওর এবং লিভার ক্যান্সারের দিকে মোড় নেওয়ার প্রবল ঝুঁকিতে আছেন তিনি। কেননা তার বয়সটাও অনুকূল নয়।আমি জাতীয় স্বার্থে ও মানবিক প্রয়োজন বিবেচনা করে আমার প্রাপ্ত লেটেস্ট আপডেট জানালাম। সাংবাদিক বন্ধুরা তাদের সূত্র থেকে এর সত্যতা যাচাই করে নিতে পারেন। তার ব্যাপারে সরকার এখনো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে পরিস্থিতির গুরুত্ব দ্রুত অনুধাবন করতে হবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন