পেঁয়াজ আমদানির শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ

পেঁয়াজ আমদানির শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক  : পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পাম তেল ও চিনি আমদানিতে শুল্ক কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সভাক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত সভার শুরুতে এ কথা জানানো হয়।সভা শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি অত্যাবশ্যকীয় কয়েকটি পণ্য (ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজ ও মশুর ডাল) এর আন্তর্জাতিক মূল্যের প্রভাবে স্থানীয় বাজারে ঊর্ধ্বমূল্য পরিলক্ষিত হওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এ সব পণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরস্থিতি স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।তিনি জানান, বর্তমানে জনস্বার্থে পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহার এবং অপরিশোধিত সয়াবিন, অপরিশোধিত পাম ও অপরিশোধিত চিনির শুল্ক হ্রাসের জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করা হয়েছে। আমদানিকৃত পেঁয়াজের কোয়ারেন্টাইন পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন করে আইপি ইস্যুকরণের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। আর পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৭-৭০ টাকা।অথচ একসপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ছিলো ৪৫ টাকা। আর পাইকারিতে কেজি ছিল ৪০ টাকা। এ হিসাবে চারদিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম ৩৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।এদিকে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ভারতে বৃষ্টি ও পূজার ছুটির অজুহাতে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ভারতেও দাম বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে অতি মুনাফার আশায় দেশের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ব্যবসায়ীরা গত বছর পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান দেওয়ায় এ বছর আমদানিও কমিয়ে দিয়েছেন তারা। এরও প্রভাব পড়েছে পেঁয়াজের বাজারে।তবে ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর এই অজুহাত মানতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলেছে, প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৮ লাখ টন। এরমধ্যে দেশে উৎপাদন হচ্ছে ৩৩ লাখ টন। সংরক্ষণের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হলেও বাকি থাকে ২৩ লাখ টন। আর প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ফলে চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ সবসময় উদ্বৃত্ত থাকে। বর্তমানে কৃষকের কাছে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত চলা যাবে। কিন্তু ভারতে বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কিন্তু এটা কেন বাড়বে। এবছর পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়েছে। দাম বাড়লে ভারতের পেঁয়াজের দাম বাড়বে। দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ার কথা নয়। মূলত অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের জন্য আজকে পেঁয়াজের বাজারে এই অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশে উত্পাদন বাড়িয়ে পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে জোর দিয়েছে সরকার। গত ৬ বছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ছে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৩০ লাখ টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৫৩ লাখ টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৫ দশমিক ৬০ লাখ টন ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ৬২ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন