নিউজ ডেস্ক : দেশে এই মুহূর্তে পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ আছে, যা দিয়ে আগামী আড়াই থেকে তিন মাস চলতে পারে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টার কোনো ত্রুটি করবো না।আমরা চেষ্টা করবো যাতে পেঁয়াজের দাম সহনীয় রাখা যায়। সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। এ সময় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান, ট্যারিফ কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমাদের দেশে এই মুহূর্তে ৫ লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ আছে, যা দিয়ে আগামী আড়াই থেকে তিন মাস চলতে পারে। ভারত ছাড়াও মিয়ানমার থেকে যদি পেঁয়াজ আনা যায় তাহলে কিন্তু এতো প্রেসার পরার কথা না। তবে বৃষ্টিজনিত কারণে কিছুটা দাম বেড়েছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করবো একমাসের কথা বলা হয়েছে সেটাও যেন সহনীয় মাত্রায় রাখা যায়।সব নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়ে যাচ্ছে অথচ আজ চারটি পণ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের আইনে যে ১৭টি নিত্য পণ্য আছে তেল, চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মসলা এই জাতীয়। সেগুলোর বিষয়ে আমাদের আইনে ক্ষমতা দেওয়া আছে মূল্য নির্ধারণে। বাকি পণ্যগুলোতে মূল্য বেধে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তবে উৎপাদনসহ অন্যান্য পরিস্থিতি অন্যন্য মন্ত্রণালয় দেখে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যেগুলো দেওয়া সেগুলো আমরা মনিটর করার চেষ্টা করবো। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চারদিক থেকে চেষ্টা করছি যাতে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যতোদিন পর্যন্ত আমরা স্বয়ং সম্পূর্ণ হবো না ততো দিন পর্যন্ত কখনো কখনো আমাদের মূল্যে নিয়ে ক্রাইসিসে পড়তে হবে। আশার কথা হলো এ বছর আমাদের গত বছরের তুলনায় উৎপাদন ভালো আছে। অন্তত এক লাখ টন পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয়েছে। প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান বলেন, লক্ষ্য করা যাচ্ছে ইতোমধ্যে পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ৭ টাকা কমে গেছে। এছাড়া সরকারি ব্যবস্থাপনায় টিসিবির মধ্যে ট্রাক সেলের জন্য আরও আমদানি করা হচ্ছে। এর ফলে আমাদের সরবরাহ উন্নিত হবে। এক মাসের যে কথাটা বলা হচ্ছে, সেখানে তদারকি বাড়ানো হবে, আশা করা যায় নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়বে না। সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে পেঁয়াজ যেন ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে।
একমাস কি পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, একমাস বেশি থাকবে সেটা বলা হয়নি। আগামী এক মাস নতুন পেঁয়াজ আসবে না। যেটা মজুদ আছে সেটা দিয়ে চলতে হবে। পাশাপাশি আমদানি করতে হবে। ৮০ শতাংশ পেঁয়াজ দেশে উৎপাদন হয়, মজুদ যথেষ্ট আছে সে হিসাবে যেন দাম না বাড়ে। এ বিষয়ে পরিষ্কার মেসেজ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাসহ প্রশাসনের যারা আছেন তারা ব্যবস্থা নেবেন। পণ্যের দাম বেধে দেওয়ার পরও কেন মানা হচ্ছে না? এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বেধে দেওয়া হয়েছে। ভোজ্যতেলের দাম মানা হচ্ছে। কিন্তু চিনির দাম আমরা কমিয়ে দিয়েছি এজন্য বাজারে প্রতিফলত হতে একটু সময় লেগেছে। এ বিষয়ে খবর পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। যদি বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয় সেটা অন্য সমস্যা। পাঁচ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে সচিব বলেন, আমরা আশা করছি এ বছর তিন মাসের জন্য শুল্ক প্রত্যাহার করা হতে পারে। পেঁয়াজে পাঁচ শতাংশ শুল্ক আছে, ডালের কোন শুল্ক নেই। যে কেউ আমদানি করতে পারে। চিনির এইচডি ও অগ্রিম ট্যাক্স আছে ও তেলের ওপর অগ্রিম ট্যাক্স প্রত্যাহারের জন্য আমরা আগেই চিঠি লিখেছি এনবিআরকে। আমরা আশা করছি দু’একদিনের মধ্যে ফলাফল পাবো। পেঁয়াজের জন্য চার মাস সুবিধা চেয়েছি। অন্য দুইটি পণ্যের ক্ষেত্রে আমরা কোনো সময় উল্লেখ করিনি।