মানুষ অতিষ্ঠ, তাই বিএনপিকে ভোট দেবে

মানুষ অতিষ্ঠ, তাই বিএনপিকে ভোট দেবে
নিজস্ব প্রতিবেদক  : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের হাত থেকে বাঁচার জন্য জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে। দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে, তাই তারা বিএনপিকে ভোট দেবে।মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের মানুষ বিএনপির সময়ে কী পেয়েছে আর আওয়ামী লীগের সময়ে কী পেয়েছে, সেটির তুলনা করতে হবে। জনগণ কাকে ভোট দেবে, আওয়ামী লীগের বাইরে আর কে আছে? কারা, কেন, কোন সুখের স্বপ্নে, কোন আশায় বিএনপিকে ভোট দেবে?প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণ বিএনপিকে এই কারণে ভোট দেবে যে, তারা দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিল, এখন ৭০ টাকার ওপরে চাল। বিনাপয়সার সার দেবে জনগণকে বলেছিল, সেখানে সারের দাম আকাশচুম্বি। এ জন্যই জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে। কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার জন্য জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে।তিনি আরও বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের হাত থেকে মুক্তি চায়, এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। সেজন্য বিএনপি এমন একটি দল, যে দলটি মানুষকে কিছুটা স্বস্তিতে নিয়ে এসেছিল। সেজন্য তারা বিএনপিকে ভোট দেবে।সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা এত কথা বলেন, এত দাম্ভিকতা দেখান, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো একটা সরকার দিয়ে নির্বাচন করে দেখেন। মানুষকে ভোট দিতে দেন। মানুষ তো নিজের ভোটটা নিজে দিতে চায়, যাকে খুশি তাকে দিতে চায়। এটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে খুবই জরুরি। আমরা আর কিছু চাই না, শুধু নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার চাই।তিনি বলেন, যে কোনো নির্বাচন কমিশনই হোক, যদি নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার না থাকে তাহলে সেই নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য হয় না। এটা শুধু আমার কথা না, সাখাওয়াত সাহেবরা যখন ইসিতে ছিলেন তখন স্পষ্ট করে বলেছেন। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হতে হলে নিরপেক্ষ সরকার থাকাটা জরুরি। ওটাই প্রথম সংকট। নির্বাচন কমিশন খুব ভালো করলেন, কিন্তু সরকার তাদের সাথে সহযোগিতা করলো না বা কাজ করতে দিল না তখন সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।সার্চ কমিটি জনগণের সাথে ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছু নয় দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সার্চ কমিটি গঠনের যে অভিজ্ঞতা আমাদের আছে তা হলো, একেবারেই নিজস্ব লোকজন দিয়ে গঠন করা হয়। এটা জনগণকে ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু আগের অভিজ্ঞতায় পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে, এটা সরকার তাদের পছন্দমতো লোকজন দিয়ে তৈরি করে এবং তাদের নির্বাচনে কাজে লাগায়। যেটা হুদা সাহেবের কমিশনকে দেখেছেন, সরকারের চেয়ে আগ বাড়িয়ে দলীয় ভূমিকা পালন করেছে। সেটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।সরকারের উন্নয়ন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এত উন্নয়ন যদি তারা করে থাকেন তাহলে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে তাদের সমস্যাটা কোথায়? তাদের তো আত্মবিশ্বাস থাকবে যে, তারা জিতবে। কেন তারা ২০১৮ সালের নির্বাচন এভাবে করলো? আপনারা নিজেরাই বলেন, ২০১৪, ২০১৮ সালের নির্বাচন কীভাবে হয়েছে। বুঝলাম ২০১৪ সালে উন্নয়ন হয়নি সেজন্য সেভাবে করেছেন। তাহলে ১৮ সালে কেন করলো? আজকে কেন তারা এই বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসছেন না? কেন সমাধান করছেন না? এটা তো আমাদের কথা না, আজকে যতগুলো বিদেশি সংস্থা আছে, এমনকি জাতিসংঘের কাছ থেকে যখন একথা আসে যে, আমরা পরবর্তী নির্বাচনে সহযোগিতা করতে রাজি আছি, যদি সরকার বলে। কেন আসে এই প্রশ্ন। কারণ নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি কারও কোনো আস্থা নেই।মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল না, আমরা সংযোজন করেছিলাম। তারাই হাইকোর্টের রায়ের দোহাই দিয়ে, ভুল ব্যাখ্যা করে, তাদের সুবিধার জন্য দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করছে। হাইকোর্ট তো আরও দুবার করতে বলেছিলেন। সংবিধান কি বাইবেল যে, পরিবর্তন করা যাবে না? তারা তো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিল, ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। সেজন্য দেশনেত্রী খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছিলেন। আজকে তারা যেহেতু জেনে গেছে, যদি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় তাহলে কোনোভাবেই ক্ষমতায় আসতে পারবে না, সেজন্য দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করছে।দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন হবেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ আগেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছে, এবারও করবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন