ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : শারমিন আক্তার সুমার (২৩) বিয়ে হয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ আগে, হাতের মেহেদী রঙ এখনও মুছে যায়নি। তবে, নৌ-দুর্ঘটনায় মুছে গেছে তার জীবনের রঙ।ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর গ্রামের জহিরুলের সঙ্গে মাত্র এক সপ্তাহ আগেই বিয়ে হয়েছিল সুমার। এরপর স্বামী ও দেবরকে নিয়ে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে ফিরছিলেন বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামে। কিন্তু বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইসকা বিলে শতাধিক যাত্রীবোঝাই ট্রলারের (ইঞ্জিনচালিত নৌকা) সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা বালুবাহী ট্রলারের সংঘর্ষে পানিতে ডুবে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। তবে, বেঁচে গেছেন স্বামী জহিরুল ও তার ভাই।শনিবার (২৮ আগস্ট) সুমার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় ও পরিবারে শোকের মাতম চলছে। সুমা ছিলেন ওই গ্রামের মৃত জারু মিয়ার একমাত্র মেয়ে। তার অকাল মৃত্যুতে মা কিছুক্ষণ পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। আহাজারিতে এলাকার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। কান্নারত অবস্থায় কথা হয় সুমার মামার সঙ্গে। তিনি জানান, মাত্র সাত দিন আগে ভাগ্নিকে বিয়ে দেওয়া হয়। সুমার বর স্থানীয় বাজারে মিষ্টির দোকানের কারিগর হিসেবে কাজ করতেন। এমন মৃত্যুর খবরে সবাই হতবাক হয়ে পড়েছেন।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে যাত্রীবাহী নৌকার সঙ্গে বালুবোঝাই ট্রলারের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আনিছুর রহমান ২২ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নৌকাটিতে ৭০ থেকে ৮০ জনের মতো যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে। এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ওই ট্রলারের মাঝিসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।