ঢাকা: পিরুলিয়া ও নয়ামাটি। ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের দুটি গ্রাম। অবশ্য পিরুলিয়া ও নয়ামাটিকে গ্রাম বললে ভুল হবে। আসলে এটি ছোট্ট একটি দ্বীপ। চারিদিকে পানি। মাঝখানে একখণ্ড জমি। জন্মের পর পানি ও নৌকার সঙ্গে জীবন শুরু হয় গ্রামের বাসিন্দাদের। অল্প বয়সেই ছেলেদের দেওয়া হয় নৌকা বানানো ও মেরামতের প্রশিক্ষণ। পিরুলিয়া ও নয়ামাটিকে বলা হয় নৌকার গ্রাম। প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষার প্রথম থেকে নৌকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে গ্রাম দুটিতে। এখন নৌকা বানানো নিয়েই ব্যস্ত গ্রামের কারিগররা। একটি নতুন নৌকা বানাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয় তাদের। জ্যৈষ্ঠ থেকে ভাদ্র-এই চার মাস মৌসুমি ব্যবসা। চাহিদা বেশি থাকায় এ সময় কারিগরদের ব্যস্ততাও বেশি।বালু নদের তীর ঘেঁষে কায়েতপাড়া বাজারে নৌকার হাট। বর্ষাজুড়ে এ হাট জমে। ঢাকার নিম্নাঞ্চলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা এখানে নৌকা কিনতে আসেন। দামে সস্তা হওয়ায় এখানকার নৌকার কদরও বেশি। নয়ামাটি ও পিরুলিয়া ছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল, সাওঘাট এলাকার কারিগররা নৌকা তৈরি করেন। কারিগরদের ৯০ শতাংশই হিন্দু সম্প্রদায়ের।নয়ামাটি এলাকার কারিগর অজয় সরকার বলেন, কাঠ ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আগের তুলনায় লাভ খুব কমই হয়। তবে আমাদের সুনাম ধরে রাখতে চেষ্টা করি।কারিগররা বলেন, নৌকা বিক্রি করেই চলছে তাদের সংসার। মেটাচ্ছেন ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ।কারিগর রমেশ দাস বলেন, একেকটি ভালো কাঠের নৌকা তৈরি করতে খরচ পড়ে নয় থেকে ১০ হাজার টাকা। আর মোটামুটি কাঠের নৌকা তৈরিতে খরচ পড়ে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা।ঢাকার ত্রিমোহনী থেকে নৌকা কিনতে আসা বাবুল বলেন, এ হাটে সস্তায় নৌকা পাওয়া যায়। তাই এ হাটের কদর বেশি।