চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাগঞ্জের ভোলাহাট-শিবগঞ্জ সড়কের সোনাজল নামক স্থানে বিভিন্ন যানবাহনে গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৩ আগস্ট) দিনগত রাতে অন্তত আধা ঘণ্টাব্যাপী এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদশীরা জানায়, প্রতিদিনের মতো ভোলাহাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় নৈশকোচ। রাত পৌনে ৮টার দিকে ভোলাহাট-শিবগঞ্জ সড়কের সোনাজল নামক স্থানে ১৫/১৬ জন মুখোশধারী ডাকাত হাসুয়া ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায় তিনটি বাসে। ডাকাতরা লাঠি দিয়ে কোচের সামনের অংশ ভাঙচুর করে ভেতরে ঢুকে যাত্রীদের পিটিয়ে নগদ টাকা ও সোনার গয়না ছিনতাই করে। এছাড়া একইসময়ে একাধিক ট্রাক, মোটরসাইকেল ও পিকআপভ্যানেও ডাকাতি হয়। ঢাকা কোচ জমজম ট্রাভেলসের হেলপার মো. আরিফ বলেন, রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। ৮টার দিকে সোনাজল নামক স্থানে ১৫/১৬ জনের ডাকাত দল মুখোশ পরে হাতে বড় বড় হাসুয়া ও লাঠি নিয়ে এসে আমাকে মারধর করে বাসের ভেতর ঢুকে যাত্রীদের পিটিয়ে টাকা গয়না ছিনিয়ে নিতে থাকে। তিনি আরো বলেন, নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির মত ঘটনাও ঘটিয়েছে ডাকাতরা।গাড়িটির সুপারভাইজার মো. আলমগীর বলেন, আমরা যখন গাড়ি নিয়ে আসি তখন আমাদের সামনে কিছু ট্রাক, পিকআপভ্যান ও মোটরসাইকেলে ডাকাতি চালিয়ে যাচ্ছিল ডাকাত দল। রাস্তাটি সরু হওয়ায় গাড়ি ঘুরিয়ে এ সময় পালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। বাস দেখে ডাকাত দল হেলপারকে মারধর করে গাড়ির ভেতর ঢুকে যাত্রীদের পিটিয়ে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। তিনি বলেন, প্রথমে সাথী এন্টারপ্রাইজ পরে আমাদের জমজম ও তারপরে চাঁপাই ট্রাভেলসে ডাকাতি করে তারা।এছাড়া ভোলাহাট থেকে আম নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আম সরবরাহ করা ট্রাকেও ছিনতাই হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদশীরা জানায়। ঢাকা কোচের টিকিট মাস্টার মো. নওশাদ বলেন, তিনটি ঢাকা কোচে প্রায় ৬০/৭০ জন যাত্রী ছিল। এদের পিটিয়ে প্রায় সবার নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে বলে অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়া একাধিক ট্রাক, পিকআপভ্যান ও মোটরসাইকেল আরোহীর টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করেছে ডাকাত দল।ঢাকাগামী জমজম বাসের যাত্রী ভোলাহাট উপজেলার বীরশ্বরপুর গ্রামের মো. গণি বিশ্বাস জানান, ডাকাতরা এসে তাকে ও তার স্ত্রীকে পিটিয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল নিয়ে গেছে। অপর যাত্রী ইমামনগর গ্রামের নারী গার্মেন্টস শ্রমিক আশা বলেন, আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।এদিকে ডাকাতের পিটুনিতে আহত আম বহনকারী ট্রাকচালক মো. কাঞ্চন বলেন, আমি আম নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলাম। রাস্তায় ডাকাতরা আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ ১০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন ছিনতাই করেছে। ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সড়কে ডাকাতির ঘটনায় আহত পাঁচজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এরা হলেন-উপজেলার খালেআলমপুর গ্রামের সাথী এন্টারপ্রাইজের চালক মো. মানোয়ার, যাত্রী রাজিয়া, বীরশ্বরপুরে ওবাইদুল, মো. রবিউল ও ট্রাকচালক মো. কাঞ্চন। এছাড়া আরো অনেকে বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে।ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বাস ডাকাতির খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। ততক্ষণে ডাকাতরা সটকে পড়ে। ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।