নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যাংকিং খাত বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আপনারা জানেন প্রাইভেট সেক্টরের ব্যাংকগুলোর আগে কী অবস্থা ছিল। এ বছর তাদের ব্যালেন্স শিট দেখলে খুব হেলদি ব্যালেন্স শিট দেখতে পাবেন, বেশির ভাগ ব্যাংকেরই ব্যালেন্স শিট ভালো।বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি অর্থনৈতিক সংক্রান্ত এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রফিট না থাকলে তো ডিভিডেন্ট দিতে পারবে না। আগে আপনারা সবসময় বলতেন যে ব্যাংকগুলো ডিভিডেন্ট দেয় না। ননানভাবে তারা ডেভিডেন্ট এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন।তিনি বলেন, ‘এখন ব্যাংকিং সেক্টর একটি ভালো অবস্থানে আসছে। আগে সরকারি ব্যাংকগুলো সরকার থেকে টাকা নিয়ে রিফাইন্যান্সিং করে তারা চলতো। এখন গত দুই-তিন বছর থেকে কাজটি আর নেই, পরিবর্তন হয়েছে। এখন রিফান্ডিং করার কোনো ব্যবস্থা নেই। সরকারি ব্যাংকগুলোকে সুস্পষ্টভাবে আমরা বলে দিয়েছি—আপনাদের অর্থ অর্জন করতে হবে। আয় করতে হবে, আয় করে ব্যয় করতে হবে। সেটিও তারা করে যাচ্ছে। সুতরাং সরকারি ব্যাংক ও বেসরকারি ব্যাংক সবাই একটু ভালো অবস্থানে আছে।মুস্তফা কামাল আরও বলেন, আগে আশঙ্কা ছিল যদি ইন্টারেস্ট রেট কমানো হয়, ৬ শতাংশ বা ৯ শতাংশ ইন্টারেস্ট রেটগুলো তাদের জন্য দিয়েছিলাম, সেটা আমরা দিয়েছিলাম আমাদের বিবেচনায় নয়, সারা বিশ্বের বিবেচনায়। কারণ আমরাও তো কোনো না কোনোভাবে কোনো দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সেসব দেশে যারা ব্যবসা করেন সেখানে ইন্টারেস্ট রেট অনেক কম, বিদেশে ইন্টারেস্ট রেট অনেক কম। সুতরাং কম ইন্টারেস্ট নিয়ে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা যদি ব্যবসা করতে পারে, তাদের কস্ট অব প্রোডাকশন কম হবে। অপরেশনাল কস্ট দেখা যাবে আমাদের চেয়ে কম। তারা প্রতিযোগিতায় টিকবে আমাদের চেয়ে বেশি।অর্থমন্ত্রী বলেন, সার্বিক বিষয়ে বিবেচনায় রেখে আমাদের ইন্টারেস্ট রেটটা সারা বিশ্বের সবার চাইতে বেশি। প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে এটি বলেছেন। আমি মনে করি এটা বাস্তবধর্মী হওয়া উচিত, সেটি হয়েছে। ব্যাংকগুলোর যে অ্যাপ্রিহেনসন ছিল ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে, আর্থিক অবস্থা ভালো থাকবে না, তাদের আয় কমে যাবে, ব্যয় বেড়ে যাবে ইত্যাদি। এগুলো বাস্তবে পাবেন না। ২০-২২ শতাংশ ইন্টারেস্ট দিয়ে কী হবে যদি আপনি না পান। আমি মনে করি আগে একটা বিষয় ছিল, যারা ব্যবসা করতেন তারা শিল্প-কারখানা করতে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতেন।মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশের মতো ইনফ্লেশন রেট খুব কম দেশে পাওয়া যাবে। সারা বিশ্বের কোথাও কোনো ব্যাংকে টাকা রাখলে ইন্টারেস্ট পাওয়া যায় না বরং টাকা রাখলে ইন্টারেস্ট দিতে হয়। এজন্য এটা আমাদের দেশের লোকজন যারা বিদেশে আছেন তারা অফিসিয়াল ব্যবসা করলে বিদেশে টাকা রেখে কিছু পান না। তাদের টাকাও এখন দেশে নিয়ে আসেন। দেশে টাকা এনে বিনিয়োগ করে তারা লাভবান হতে পারেন।শেয়ারবাজার বেশ ভালো উচ্চতায় পৌঁছেছে, যেসব কোম্পানি প্রোডাকশনে নেই তাদের মূল্য অনেক উপরে উঠে যাচ্ছে—বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন বিষয়টি দেখবে। আমাদের পুঁজিবাজারের যে বেসিক বিষয় সেটি হচ্ছে—দেশের অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতি যখন ভালো হবে, পুঁজিবাজারের অবস্থাও চাঙ্গা থাকবে। যে অসঙ্গতিগুলো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন সেটা আমি সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাব।