‘লকডাউনের’ খবরে ভোগান্তি উপেক্ষা করে বাড়ি ফেরার তাড়া

‘লকডাউনের’ খবরে ভোগান্তি উপেক্ষা করে বাড়ি ফেরার তাড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন বিধিনিষেধ মেনে ‘লকডাউন’ চললেও আগামী সোমবার (২৮ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে ‘কঠোর লকডাউন’। এ ‘লকডাউনে’ সবকিছু বন্ধের খবরে আগাম ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন অসংখ্য মানুষ।তাদের মতে, আয়-রোজগার সংকটের শঙ্কায় বাড়ি ফিরছেন তারা।শনিবার (২৬ জুন) সকাল থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেন মানুষ। যানবাহন সেভাবে না চললেও সকাল থেকে বাস টার্মিনালে ছিল মানুষের ভিড়। অনেকে রওনা হয়েছেন হেঁটে।এদিকে দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিকল্প যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা করছেন অনেকে। সেক্ষেত্রে বাড়তি টাকা যেমন খরচ করতে হচ্ছে, তেমনি পদে পদে ভোগান্তিরও শেষ নেই। ভিড়-ব্যস্ত এসব ঘরমুখো মানুষের যাত্রায় উপেক্ষিতও করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্যবিধি।সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদে বাড়ি ফেরার জন্য যে উপচেপড়া ভিড় দেখা যায় তার মতোই অবস্থা চলছে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলেই ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ। তারা হন্যে হয়ে ভাড়ায়চালিত প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস খুঁজছেন। চালকরাও ভাড়া হাঁকছেন দ্বিগুণ-তিনগুণ। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুনেই ফিরছেন গ্রামে।আজাদ নামে এক যাত্রী বলেন, গতবার ‘লকডাউনে’ ঢাকাতেই আটকে পড়েছিলাম। পরে কষ্ট করতে হয়েছে অনেক। তাই এবার গ্রামে ফিরছি। অন্তত  কাজ বা খাদ্যের সমস্যা তো হবে না আশা করি। আর নিম্ন আয়ের মানুষদের পরিবারই তো সবকিছু। তাই গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরছি।আরিফ রেজা নামে আরেক যাত্রী বলেন, এবার ইচ্ছে ছিল গ্রামে ঈদ করবো। তবে ‘লকডাউনে’ তো বাস বন্ধ। খুলবে কিনা তারও ঠিক নেই। করোনার মধ্যে অফিসেও ঝামেলা। তাই সবকিছু পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার আগেই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গ্রামে ফিরছি। যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বেশ, হেঁটেই যাত্রা বলা যায় এক রকম। এদিকে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস চালকরাও ভাড়া হাঁকছেন দ্বিগুণ-তিনগুণ।আনিসুর রহমান নামে এক প্রাইভেট কার চালক বলেন, এখন তো সড়কে গাড়ি চলছে না। একেক জায়গায় একেক সমস্যা। আমরা কিছু যাত্রী নিয়ে চলাচল করছি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রিজার্ভ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।গাবতলী ঘুরে দেখা যায়, বাধ্য হয়ে বাড়ির পথে অন্তত যতদূর যাওয়া যায় সিএনজি, মোটরবাইকে যাত্রা করছেন অনেক মানুষ। যারা তাও জোটাতে পারছেন না তাদের অনেককেই হেঁটে রওনা দিতে দেখা গেছে। আবার কেউবা চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে যেতে না পেরে পড়েছেন বিপাকে।ঝুঁকিপূর্ণভাবে এমন যাত্রায় কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধি মানার তোয়াক্কা নেই। বিশেষ করে বয়স্ক, নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন। তিন-চার গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন সবাই। সুযোগ বুঝে চড়া দাম হাঁকছেন বিকল্প এসব বাহনের চালকরা, দৌরাত্ম বেড়েছে এক শ্রেণির দালালদেরও। আর চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও প্রশাসনের চোখের সামনে চলছে এমন দৌরাত্ম। তবে মানুষের এমন বেপরোয়া চলাচলে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা যেন বেশি।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন