নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। লকডাউন, কঠোর বিধি-নিষেধের পর এবার শাটডাউনের মতো সিদ্ধান্তও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।তবে এতকিছুর পরেও জনসমাগমস্থলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি এক রকম উধাও হয়ে গেছে। তদারকিতে নেই যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারি।বিনোদন কেন্দ্র, শপিং সেন্টার ও বিপণিবিতান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, গণপরিবহন, রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে প্রায় সব জায়গাতেই স্বাস্থ্যবিধি, শারীরিক দূরত্বের মতো বিষয়গুলো মেনে চলার বালাই দেখা যায় না। দীর্ঘদিন লকডাউন ও কঠোর বিধি-নিষেধ শিথিল করার পর শুরুর দিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে কঠোরতা দেখা যায়। তবে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে শিথিলতা আসতে শুরু করে।শুক্রবার (২৫ জুন) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। মিরপুর ১০ নম্বরের শাহ আলী শপিং কমপ্লেক্সে প্রবেশের সময় আগের মতো আর স্বাস্থ্যবিধি মানতে হচ্ছে না দর্শনার্থীদের। গেটে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার শর্ত থাকলেও তেমনটি দেখা যায়নি। কিছু কিছু দোকানে দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। সেখানে শারীরিক দূরত্ব মানার বালাই দেখা যায়নি গ্রাহকদের মধ্যে।শপিং কমপ্লেক্সটির দোকান মালিক সমিতির সদস্য আনিসুর রহমান বলেন, লকডাউনের পর যখন মার্কেট খুলে দিল তখন সবার মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মানার সচেতনতা ছিল। আমাদের মার্কেটের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। কিন্তু গ্রাহকরা অনেক সময়ই এগুলো মানছেন না। প্রবেশের সময় হাত ধোন না অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিচ্ছেন না। দোকানে অনেকে একসঙ্গে ভিড় করছেন। আমরা কিছু সময় পরপর মাইকিং করছি, সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।এদিকে হাতিরঝিলসহ বেশ কয়েকটি স্থানে গিয়েও জনসমাগম দেখা যায়। ঝিলের ধাড়ে থাকা ব্রিজগুলোতে জড়োসড়ো হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন এখানে আসা দর্শনার্থীরা।খাবারের দোকান ও রেস্তোরাঁগুলোতে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক অতিথিদের আপ্যায়নের নিয়ম থাকলেও সেটিও মানা হচ্ছে না বেশিরভাগ রেস্টুরেন্টেই। কোথাও কোথাও সবগুলো আসন আবার কোথাও অর্ধেকের বেশি সংখ্যক অতিথিদের আপ্যায়ন করতে দেখা যায় রেস্টুরেন্টগুলোকে। মিরপুর পল্লবী এলাকার হট প্লেস রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শুক্রবার বা ছুটির দিনগুলোতে গ্রাহকদের কিছুটা চাপ থাকে। তাই হয়তো মাঝে মধ্যে অর্ধেকের বেশি বা ফুল হাউজ হয়ে যায়। তবে আমাদের এখানে সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট এমনভাবে রাখা হয়েছে যেন টেবিলগুলো একে অপরের থেকে কিছুটা দূরে। অন্যদিকে রাজধানীর গণপরিবহনগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি এক রকম উধাও হয়ে গেছে। একটি করে আসন ফাঁকা রেখে বসার নিয়ম করা হলেও সবগুলো আসন তো বটেই এমনকি দাঁড়িয়েও যাত্রী ওঠানো হচ্ছে। তবে সবার কাছ থেকেই নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ৬০ শতাংশ ভাড়া। সাধারণ মানুষরা বলছেন, জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে তাদের। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকেই।