ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা মিরাশানী পলিটেকনিক একাডেমীর শিক্ষক মোঃ আবু নাঈমকে পরিবারসহ পিটিয়ে রক্তাক্ত করার ঘটনায় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনার প্রতিবাদে স্কুলের বর্তমান ও সাবেক ছাত্রছাত্রী আগামী শুক্রবার ১৮ই জুন, মিরাশানী স্কুল মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশের আহবান করেন।
সহকারী শিক্ষক আবু নাইম (৫৫) ও তার স্ত্রী-দুই ছেলেকে হামলা করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। এই ঘটনায় শিক্ষক আবু নাইম বাদী হয়ে বিজয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এই হামলার ঘটনায় আহত অন্যান্যরা হলেন, শিক্ষক আবু নাইমের স্ত্রী মোছা. পারভীন আক্তার, বড় ছেলে শামসুদ্দিন জিসান ও ছোট ছেলে আবু আব্দুল্লাহ শরফুদ্দিন। এরমধ্যে শামসুদ্দিন জিসান জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।স্কুল শিক্ষার্থী ও আহত শিক্ষকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক আবু নাইম তার বাড়ির আঙিনায় গরুর জন্য ন্যাপিয়ার গাছ চাষ করেন।
রোববার সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় দেখেন তার রোপন করা ন্যাপিয়ার গাছ গুলো এলাকার মৃত নাসির ভূইয়ার ছেলে ইয়াছিন (৪৫) গরু বেঁধে রেখে খাওয়াচ্ছেন। বিষয়টি দেখে শিক্ষক নাইম এগিয়ে গিয়ে তার রোপন করা চারা গাছ গুলো গরুকে খাওয়াতে নিষেধ করেন। এনিয়ে ইয়াছিনের সাথে শিক্ষক নাইমের বাকবিতণ্ডা হয়।
শিক্ষক নাইমকে তার দুই ছেলে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এরই জেরে পর দিন সোমবার ভোরে ফরজ নামাজের পর কোরআন শরীফ পড়ে ঘর থেকে বের হলে ইয়াছিন তার ছেলে ও ভাতিজা শরিফ শিক্ষক আবু নাইমের উপর হামলা করে। তার আত্মচিৎকারে শিক্ষকের দুই ছেলে ও স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হয়ে আবু নাইমকে রক্ষার চেষ্টা করেন।
তখন হামলাকারীরা তার দুই ছেলে ও স্ত্রীর উপর দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা করে আহত করে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এই ঘটনায় সোমবার রাতে বিজয়নগর থানায় শিক্ষক আবু নাইম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
শিক্ষক ও তার পরিবার উপর হামলা করে রক্তাক্ত করার ঘটনায় মেরাশানী পলিটেকনিক একাডেমীর সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এনিয়ে চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রতিবাদের ঝড়। তারা এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
এই বিষয়ে বিজয়নগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন জানান,’শিক্ষক ও তার পরিবারের উপর হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
মিরাশানী স্কুলের শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা শিক্ষক সমাজ স্যারের পাশে আছি। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির জন্য রাষ্ট্রের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। তিনি সাবেক ও বর্তমান সকল ছাত্রদের প্রতি আহবান জানান আগামী শুক্রবারের বিক্ষোভ সমাবেশে সবাই যেন সকাল ৯ টার মধ্যে এসে উপস্থিত হয়।
হামলার প্রতিবাদে সাবেক ও বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে বিচারকার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হওয়ার জন্য এবং আসামীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য আন্দোলন পরিষদ গড়ে তোলেন। সাবেক ছাত্র আকিব জাবেদ, কামরুল ইসলাম বিজয়,সৌরভ,শরিফ,রণিসহ শতাধিক ছাত্র সার্বিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সাবেক ছাত্র মোস্তাফিজ আহমেদ রিফাত বলেন, শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর। স্যারের গায়ে যারা হাত তুলেছে তাদের এমন শাস্তি হওয়া উচিৎ যাতে ভবিষ্যতের জন্য তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।