এতোদিনের জল্পনা কল্পনার অবসান ঘোতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১২ জুন) নির্বাচনের আগে আরেক ভাগ্য নির্ধারণের খেলা। সেই খেলায় যিনি উত্তীর্ণ হবেন, তিনিই সিলেট-৩ আসনের পরবর্তী কান্ডারি হতে পারেন, এমনটি ধারণা সিলেটের মানুষের।
এ কারণে নৌকার মাঝি হতে এ কয়দিন দলের মনোনয়ন ফরম কেনার হিড়িক পড়ে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ২৫ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন বলে দলীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দলীয় সূত্র মতে, সিলেট-৩ আসনে প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদের উত্তরসূরী হতে ২৫ জন মনোনয়ন ফরম কিনলেও ভাগ্য কার সহায় হবে, এ নিয়ে চুল চেরা বিশ্লেষণ চলছে।
যদিও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় তিন ডজন নেতাকর্মী সংসদ সদস্য হতে এলাকায় সুর ছড়িয়েছেন। তাদের অনেকে প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছেন। এর মধ্যে দুই ডজনের বেশি আওয়ামী লীগেরই প্রার্থী। রাঘব বোয়ালদের সঙ্গে চুনোপুঁটিরা নৌকার মাঝি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তবে নেতাকর্মীরা লম্বা এ তালিকা থেকে তিন/চারজনের নাম রেখে বাকিদের হিসেবের বাইরে রাখছেন।
নেতাকর্মীদের অনেকে বাংলানিউজকে বলেন, দলীয় বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছেন মাহমুদ উস সামাদের স্ত্রী শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের উপদেষ্টা ফারজানা সামাদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক দুলাল।তাদের পেছনের কাতারে আলোচনায় জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি শাহ মুজিবুর রহমান জকন ও ব্যবসায়ী নেতা তাহমিন আহমদ।
এছাড়াও দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রকারীদের মধ্যে নাম পাওয়া গেছে, ষাটের দশকের ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পিপি নিজম উদ্দিন অ্যাডভোকেট, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শমসের জামাল, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত টুটুল, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টু, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ম্যানচেস্টার শাখার সাবেক সভাপতি স্যার এনাম উল ইসলাম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক আসম আসম মিসবাহ, সিলেট জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য শামীম ইকবাল, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সাইফুল আলম এবং বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এম সাদরুল আহমেদ খান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সিলেট এমসি কলেজ সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি সেলিম আহমদ, বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা যুব প্রজন্মলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুস শহীদ কাজল।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস মারা যান। এরপর গত ১১ মার্চ তারিখে জাতীয় সংসদের ২৩১ সিলেট-৩ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ এর দফা (৪) অনুযায়ী উক্ত শূন্য আসনে ৮ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ জনিত দুর্বিপাকের কারণে এ দফায় মেয়াদান্তে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় শূন্য আসনটিতে ৮ জুন পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তফসিল ঘোষণা করে ইসি।
তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৫ জুন। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ জুন এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৩ জুন। ২৪ জুন হবে প্রতীক বরাদ্দ এবং আগামী ১৪ জুলাই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচন কমিশন ভোটের তারিখ পরিবর্তন করে ২৮ জুলাই নির্ধারণ করেছে।