জানা যায়, পাহাড়ের ক্ষতি এবং পরিবেশ দূষণকারী জুম চাষ রোধ করতে মূলত কৃষি বিভাগ গত এক দশক ধরে পাহাড়ের ঢালুতে উন্নত জাতের আম চাষে কৃষকদের সহায়তা করে আসছে। বলতে গেলে কৃষি বিভাগ অনেকাংশে সফলও হয়েছে। অনেক চাষি বেশি লাভের আশায় জুম চাষ বন্ধ করে পাহাড়ে আম্রপালি এবং রাংগুই জাতের আম চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
বরকল উপজেলার সুবলং গ্রামের আম বাগানের মালিক ও চাষি চিত্র রঞ্জন চাকমা বলেন, এ বছর আমের অনেক ভালো ফলন হয়েছে। জুনের মাঝামাঝি আম সংগ্রহ শুরু হবে। তবে এই করোনার কারণে বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা কম আসছেন। বাগানে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তা উঠবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাজারের চাহিদা অনুযায়ী চাষিরা মণ প্রতি ৯০০ টাকায় আম বিক্রি করবেন। এখন বড় সমস্যাটা হলো বাজার পর্যন্ত আম নিয়ে আসার জন্য ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া এবং শ্রমিকের পেছনে ব্যয় বেশি হয়। বিক্রির সঙ্গে খরচের হিসেব না মিললে লোকসানের পাল্লাটা ভারী হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটিতে এ বছর আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। সর্বমোট ৩৩৯২ হেক্টর বাগানে আম্রপালি এবং রাংগুই জাতের আমের চাষ করা হয়েছে। পাহাড়ে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার পরও এবার কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, বরকল, নানিয়ারচর ও রাঙামাটি সদর উপজলোর বিভিন্ন স্থানে আমের ফলন চাহিদা অনুযায়ী বেশ ভালো হয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, বাগানের প্রতি হেক্টরে প্রায় ১১ টন করে আমের ফলন এসেছে। অধিকাংশ বাগানের আম পাকতে শুরু করেছে। প্রান্তিক চাষিরা বাগানের আম সংগ্রহ শুরু করেছেন। ১৫ জুন থেকে রাঙামাটির গুরুত্বপূর্ণ হাটগুলোতে আম্রপালি ও রাংগুই আম বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি অঞ্চলের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক জানান, অন্য মৌসুমের তুলনায় এবারের মৌসুমে রাঙামাটিতে আমের ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে। এরমধ্যে আম্রপালি এবং রাংগুই জাতের আম অন্যতম। কারণ জাত দু’টির চাহিদা জেলার বাইরে বেশি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চাষিরা নিজেদের বাগান থেকে আম সংগ্রহ শুরু করে দিয়েছেন। ব্যবসায়ীরাও জাত দু’টি কিনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমের সয়লাব হবে বাজার।
কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে আমের জাত দু’টো জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।