সিলেট প্রতিনিধি : ভূমিকম্প আতঙ্কে রয়েছেন সিলেটবাসী। অনেকে আতঙ্কে বহুতল ভবন ছেড়ে অন্যত্র টিনশেডের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।কেউবা পরিবারের লোকজনকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।শনিবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চার দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়।এদিন সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে প্রথম দফা রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক শূন্য। দ্বিতীয় কম্পন ১০টা ৫১ মিনিটে রিখটার স্কেলের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। এরপর ১১টা ২৯ মিনিটে ২ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তিনটিরই উৎপত্তিস্থল সিলেটের আশপাশে। ঢাকা থেকে উত্তর পূর্বে এর অবস্থান। এরপর বেলা ২টায় আবারও কেঁপে ওঠে সিলেট।নগর ও আশেপাশের এলাকায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে চার বার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় সিলেটবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সরেজমিন দেখা যায়, অনেকে ভয়ে বাসা ছেড়ে পরিচিত কারো টিনশেডের বাসায় সাময়িকভাবে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেক বাসিন্দাদে ভয়ে নগর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে দেখা যায়।নগরের গার্ডেন টাওয়ারের বাসিন্দা মাহমুদ হোসেন বলেন, ভূমিকম্প আতঙ্কে সিলেট নগরের গার্ডেন টাওয়ারের অন্তত ৮/১০ পরিবার বাসা ছেড়ে নিরপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।একইভাবে নগরের উপশহর বহুতল ভবন স্প্রিং টাওয়ার, মাল্টিপ্ল্যান, সুবিদবাজার এক্সেল টাওয়ার, টিলাগড়ের কয়েকটি ভবনের বাসিন্দাদের বহুতল ভবন ছেড়ে যেতে দেখা যায়।নগরের সুবিদবাজারের বাসিন্দা আখতার হোসেন বলেন, ভূমিকম্প আতঙ্কে পরিবার-পরিজনকে গ্রামের বাড়ি বড়লেখায় পাঠিয়ে দিয়েছি। বাড়িতে টিনশেডের ঘর। অনেকটা নিরাপদ।শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর ও পরিবেশ কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, ছোট ছোট ভূমিকম্পগুলো বড় ভূমিকম্পের বার্তা বহন করে। আগামী ৭/১০ দিন সিলেটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।সিলেটবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বেলা ২টার দিকে যে ভূমিকম্প হয়েছে, তা সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের কাছে উৎপত্তিস্থল। বাকি কম্পনগুলোও সিলেটের আশপাশে হয়েছে। তাই সিসিক মেয়রকে প্রস্তুতি নিতে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তিনি যেন ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিভাগ, গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখেন। যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।কয়েক দফা ভূমিকম্পের কারণে শনিবার বিকেলে জরুরি বৈঠক ডাকেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বৈঠকে ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানান মেয়র।সিসিক মেয়র বলেন, সিলেট নগরে ৪ বার ভূমিকম্প হয়েছে। মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে কীভাবে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় করা যায় সেটি নিয়ে ভাবতে পরামর্শ দেন তিনি।ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাদের কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটি নিয়েও ভাবছেন জানিয়ে মেয়র বলেন, জনগণকে খুব আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে।বৈঠকে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন সিস্টিমস লিমিটেডের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ২৪ ঘণ্টা কাজ করে এমন টিম রয়েছে। কল সেন্টারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে ভূমিকম্প পরবর্তীতে কোথাও গ্যাসলাইন লিকেজ হলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তত আছে আমাদের টিম।