রাজশাহী: একটানা ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (২৪ মে) ভোর থেকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রথম দিন রাজশাহী-ঢাকা রুটে ১০ জোড়া আন্তঃনগর ও দুই জোড়া লোকাল মেইল ট্রেন চলাচল শুরু করেছে।বন্ধ রয়েছে রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন।সোমবার (২৪ মে) থেকে আবারও ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ার পর রাজশাহী রেলস্টেশনে পরিদর্শনে যান পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে চালু হওয়া সবগুলো ট্রেনের শতভাগ টিকিটই অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রতিটি ট্রেনের অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে টিকিট ছাড়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুব সতর্কতার সঙ্গে যাত্রীদের ট্রেনে তোলা হচ্ছে। স্টেশনে মেডিক্যাল টিমসহ রেলওয়ের সংশিষ্ট কর্মকর্তারা সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছেন। এ সময় সবাইকে মাস্ক পড়ে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্টেশনে আসার ও ট্রেনে ভ্রমণ করার অনুরোধ জানান পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক।এদিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে সোমবার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে আন্তঃনগর ট্রেন তিতুমীর এক্সপ্রেস সর্ব উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের চিলাহাটির উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা একমাত্র বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আসে। এখান থেকে সকাল ৭টায় রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর মধুমতী এক্সপ্রেস সকাল ৮টায় ফরিদপুরের ভাঙার উদ্দেশে রাজশাহী ছেড়ে যায়। এরপর থেকে আগের সিডিউল অনুযায়ী একটি একটি করে ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে রাজশাহী ছেড়ে যাচ্ছে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, আজ টিকিট ও মুখে মাস্ক পড়া ছাড়া কাউকেই স্টেশনের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। স্টেশনের প্রবেশমুখে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। এরপর যাত্রীদের হাত সেনিটাইজ করে দেওয়া হচ্ছে। তবে অনলাইন জটিলতায় প্রথম দিন অনেকেই টিকিট কাটতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন। তাই আজ এসব ট্রেনে নির্ধারিত যাত্রীর তুলনায় অর্ধেকেরও কম যাত্রী ছিল।তবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, হঠাৎ ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত আসে। তাই ট্রেনের টিকিট বিক্রির সার্ভার চালু করতে দেরি হয়েছে। এতে প্রথম দিন যাত্রীদের অনেকেই টিকিট কাটতে পারেননি। এজন্য যাত্রীও কম হয়েছে।সকাল ৬টা ২০ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটি মাত্র ১১৫ জন যাত্রী নিয়ে চিলাহাটির উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এর মোট আসন রয়েছে ১ হাজার ৮৭টি। এখানেও অর্ধেক যাত্রী যাওয়ার কথা ছিল। সকাল ৭টায় ছেড়ে যাওয়া বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা ৯৮৮। এর মধ্যে অর্ধেক যাত্রী হিসেবে ৪৯৪টি আসন বিক্রি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদিন মাত্র ২৫৫ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এছাড়া মধুমতী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৮টায় ফরিদপুরের ভাঙার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে মাত্র ২২৫ জন যাত্রী নিয়ে। এ ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা ৭৮৪টি। অথচ এর অর্ধেকেরও কম যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি রাজশাহী ছেড়ে গেছে। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম জানান, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে পশ্চিমাঞ্চলের মোট ১৩ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া মেইল ট্রেন চলে তিন জোড়া ও কমিউটর ট্রেন চলে দুই জোড়া। তবে আপাতত রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচলরত আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ থাকবে। মোট ১০ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন ও দুই জোড়া মেইল ট্রেন চলাচল করবে।