চার থেকে পাঁচগুণ বেশি খরচে ঈদযাত্রা

চার থেকে পাঁচগুণ বেশি খরচে ঈদযাত্রা
ঢাকা: দূরপাল্লার গণপরিবহন না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ঈদযাত্রীরা। এবারের ঈদযাত্রায় চার থেকে পাঁচগুণ বেশি খরচ হচ্ছে সবার।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলছে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের আদলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। যাতে আন্তঃজেলা পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল। ফলে ভেঙে ভেঙে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান, ট্রাকে করে ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ। অনেকেই উপায়ন্ত না পেয়ে হেঁটেও যাত্রা করেছেন বাড়ির উদ্দেশ্যে।

ঢাকা থেকে সড়কপথে মাগুরা যেতে খরচ পড়ে নন-এসি বাসে ৫শ টাকা এবং এসি বাসে ৮৫০ টাকা। কিন্তু এবারের ঈদযাত্রায় খরচ হচ্ছে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি। ঢাকা থেকে মাগুরার যাত্রী শাহিদুল হাসান বলেন, আমি তিন-চার মাস পরপরই বাড়ি যাই। সাধারণত ননএসি বাসে ৫শ টাকা এবং এসি বাসে ৮৫০ টাকা লাগে। কিন্তু এবার বাড়ি যেতে ১৮শ থেকে দুই হাজার টাকা লাগবে। একই সঙ্গে ফেরির ভোগান্তি তো আছেই।

ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের বাস ভাড়া নন-এসি ৩শ ৫০ টাকা এবং এসি ৫০শ টাকা। কিন্তু এবারের ঈদযাত্রায় সে খরচ দাঁড়াচ্ছে দেড় হাজার টাকায়।

শ্রীমঙ্গলের পার্শ্ববর্তী উপজেলা কমলগঞ্জের বাসিন্দা আজিজুল বাশার বলেন, সরকার সব খোলা রেখে খালি দূরপাল্লার বাস বন্ধ রাখছে। ফলে আমাদের পকেট থেকে পয়সা বেশি খরচ হচ্ছে।

নানা ঝক্কি পেরিয়ে যারা ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে ফিরছেন তাদেরও ভোগান্তির শেষ নেই। সরাসরি কোনো যান না থাকায় কয়েকগুণ খরচ বাড়িয়ে ঘরে ফিরছেন তারা।

ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ যাওয়া একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমরা সব সময় বাসে করে আসি। নন এসি বাসের ভাড়া ২৫০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৪৫০ থেকে ৫শ টাকা। এবার প্রাইভেটকার ভাড়া করে এসেছি। খরচ পড়েছে ১০ হাজার টাকা। অথচ আগে এ ভাড়া ছিল ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা।

একই এলাকার বাসিন্দা হাসিবুল হাসান মোটরসাইকেলে চেপে ঢাকা থেকে গেছেন। তিনি বলেন, এর আগেও আমি মোটরসাইকেলে করে এসেছি। সময় লাগতো সর্বোচ্চ সাড়ে তিন ঘণ্টা। এবার লেগেছে আট ঘণ্টা। এর কারণ প্রচুর ব্যক্তিগত গাড়ির জট।

এদিকে, লঞ্চ বন্ধ থাকায় নৌপথ পাড়ি দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম এখন ফেরি। যারা নানা ঝক্কি পেরিয়ে যারা ঘাটে আসছেন তারা বললেন, চার থেকে পাঁচগুণ বেশি খরচ করে ঘাটে এসেছেন।

মুহাহিদুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, ১ হাজার টাকা খরচ করে পাটুরিয়া ঘাটে আসছি। অটোরিকশা, পিকআপে আসছি। সবাই জায়গায় বাড়তি খরচ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দূরপাল্লার বাস বন্ধের সুযোগ নিয়ে বছরব্যাপী দীর্ঘ লকডাউনে কর্মহীন আয়-রোজগার কমে যাওয়া কর্মজীবী-শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের ঘরমুখী যাত্রীসাধারণের কাছ থেকে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, সিটি সার্ভিস ও শহরতলীর বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে। এছাড়াও এসব পরিবহনে গাদাগাদি করে যাতায়াতের ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে।

এসব অনিয়ম ও জুলুম বন্ধে সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন