এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথম ই্উনিটের রিয়্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে চলেছে। এর আগে ডুম স্ট্রাকচারের কাজ শেষ করা হবে। আগামী জুন থেকে ডুম স্ট্রাকচারের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এর পর এ বছর সেপ্টেম্বরেই প্রকল্পের মূল যত্রাংশ রিয়্যাক্টর স্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, প্রকল্পের ইনার কনটেইনমেন্টের ৪৪ দশমিক ১ মিটার পর্যন্ত নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী জুন মাসে ডুম স্ট্রাকচারের কাজ করা শুরু হবে। এর পর সেপ্টেম্বরে আমরা রিয়্যাক্টর স্থাপন করবো বলে আশা করছি। এদিকে রাশিয়ায় আরএনপিপির যন্ত্রাংশ তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভেসেল তৈরি হয়ে গেছে। চলতি বছরই এটি দেশে এসে পৌঁছাবে। চলতি মে মাসের মাসের শেষে দিকে এ রিয়্যাক্টর ভেসেল সমুদ্র পথে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে পাঠানো হবে। গত মাসে এটিকে রাশিয়ার জেএসসিএইএম টেকনোলজির ভল্গোদনস্ক শাখা (রোসাটমের যন্ত্র প্রস্তুতকারী শাখা-এটোমএনার্গোম্যাস) থেকে বিশেষ বার্থে করে পাঠানো হয়েছে ভলগা নদীতে। সেখান থেকে জাহাজে করে জলপথে নভোরোসিস্ক যাবে। এর পর নভোরোসিস্ক থেকে ১৪,০০০ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে। নভোরোসিস্ক বন্দর থেকে মে মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশের মংলা সমুদ্র বন্দরের দিকে এটি যাত্রা করবে। মংলা বন্দরে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে পদ্মা নদী দিয়ে ঈশ্বরদীর নৌবন্দরে নিয়ে আসা হবে। এই একই প্রক্রিয়ায় প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টরটিও আনা হয় এবং গত বছর নভেম্বরে প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়।
রাশিয়ার ঋণ ও কারিগরি সহায়তায় পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে দেশের প্রথম এ পারমাণবিক প্রকল্প। জনবল প্রশিক্ষণসহ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। আর এই অর্থের নব্বই ভাগ ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া। এ প্রকল্পে রাশিয়ার সর্বশেষ উদ্ভাবিত অত্যাধুনিক থ্রি জি(+) রিয়্যাক্ট ভিভিইআর ১২০০ স্থাপন করা হবে। দুই ইউনিটের প্রতিটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট। এই প্রকল্প থেকে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। আগামী ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যথা সময়েই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
এ সব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, সব কিছু নিয়ম মতোই চলছে। কাজের গতিতে কমতি থাকার কোনো কারণ নেই। আমি কয়েকদিন আগেও প্রকল্পে গিয়েছিলাম, আবার যাবো। কোভিডের কারণে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য ব্যাপক সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে আশা করি।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর আরও বলেন, মে মাসের শেষ দিকে দ্বিতীয় ইউনিটের রিয়্যাক্টর পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে সমুদ্র বন্দরের উদ্দেশ্যে কারখানা থেকে পাঠানো হয়েছে। করোনার মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রকল্পের কাজ স্বাভাবিক গতিতেই এগিয়ে চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।